
বাংলাবাজার পত্রিকা
বগুড়া: লাখো মানুষের অশ্রুজলে বিদায় নিলেন সাবেক তুখোর ছাত্র নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান। নিজের জন্মভূমিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তিনি।
বগুড়া -১ নির্বাচনী (সোনাতলা-সারিয়াকান্দি) আসনের নির্বাচিত এমপি আব্দুল মান্নানকে সোমবার বিকেলে তার জন্মভূমি সারিয়াকান্দি উপজেলা সদরের বালুয়া এলাকার মডেল মসজিদের পাশে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে।
এ সময় সেখানে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে তার দাফন সমপন্ন হয়। এর আগে সোনাতলা ও পরে সারিয়াকান্দি কলেজ মাঠে তার দুটি পৃথক জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে তার লাশ আনা বগুড়ায় আনা হয়।
পরে দুপুর ২টায় সোনাতলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে তার লাশ সোনাতলায় আনা হয়। তার লাশ বহনকারী হেলিকপ্টারটি ১২টার দিকে উপজেলার মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরন করে।
সোনাতলা পরে দুপুর ২টায় বাদ যোহর সোনাতলা শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে তার কফিন নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে পুলিশে একটি চৌকস দল।
সেখানে তার ২য় নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তার জানাযাজায় অংশ গ্রহন করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবি সংগঠন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজ নৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষে থেকে তার কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
সোনাতলা ও সারিয়াকান্দির ২টি জানাজা নামাজে অংশ নেন বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রী ড, আব্দুল রাজ্জাক, জাতীয় সংসদের ডিপুটি স্পিকার অ্যাড, ফযলে রাব্বি মিয়া,
প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মুহা নজরুল ইসলাম খান, বগুড়া -৫ (শেরপুর –ধুনট) নির্বাচনী আসনের এমপি হাবিবুর রহমান, বগুড়া-১ আসনের বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি রফিকুল ইসলাম,
জাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক এমপি রেজাউল করিম তানসেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক,
বগুড়া আওয়ামী লীগের বর্ষিয়ান নেতা ও জেলা পরিষদের সভাপতি ড. মকবুল হোসেন, বগুড়ার জেলা প্রশাসক মুহা. ফয়েজ আহম্মেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু,
পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল, বগুড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোজাম্মেল হক, মরহুম এমপি আব্দুল মান্নানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সজল,
সোনাতলা উপজেলা চেয়ারম্যান এড. মিনজাদুজ্জামান লিটন, সোনাতলার বিএনপি নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল তৈয়ব জাকির,
সারিয়াকান্দি বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী এরফানুল রহমান রেন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মহন, আসাদুর রহমান দুলুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ লাখো মানুষ।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষি বিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও এমপি আব্দুল মান্নান গত ১৮ জানুয়ারি শনিবার সকালে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাত্র (৬৭) বছর বয়সে মারা যান। তিনি ২ সন্তানের জনক ছিলেন।
তাদের মধ্য মেয়ে মাহিরা মান্নান আমেরিকায় অবস্থান করায় আব্দুল মান্নানের মৃতদেহটি বারডেম হাসপাতালের হিম ঘড়ে রাখা হয়।
সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিন প্লাজায় মরহুমের প্রথম জানাজা নামাজ শেষে তাকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে মরহুম সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের মৃতদেহ বগুড়ায় আনা হয়।
এ সময় লাশের সঙ্গে বগুড়ায় আসেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় সংসদের ডিপুটি স্পিকার পযলে রাব্বি মিয়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক সহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতা।
এর আগে এমপি আব্দুল মান্নানের মৃতদেহ বগুড়ায় আনার খবরে নিজ নির্বাচনী এলাকা সোনাতলা ও সারিয়াকান্দিকে লাখো মানুষের ভীর এক সময় জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
এ সময় সেখানে জনসমুদ্র ঠেকাতে আইন শৃংখলায় নিয়োজিত বাহিনীর সদস্য ও সেচ্ছাসেবক বাহিনীর লোকজনকে হিমশিম খেতে হয়। বিকাল ৪টায় তার জন্মস্থান সারিয়াকান্দি উপজেলার ডিগ্রি কলেজ মাঠে তার শেষ জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
জানাযা নামাজে গোটা এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয় । পরে তাকে তার জন্মস্থান হিন্দুকান্দি গ্রামের বালুয়া পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।