বাংলাবাজার পত্রিকা
ডেস্ক: বাংলাদেশে আবহাওয়া ও জলবায়ুগত দিক দিয়ে পাম উৎপাদনে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। পাম উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় দেশ মালয়েশিয়ার চেয়ে বাংলাদেশের জমির উর্বরতা শক্তি বেশি।
আর এ উপযোগিতা ও সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে অনাবাদি, পতিত জমি এবং সড়ক কিংবা রেল লাইনের ধার ঘেঁষে পাম চাষ করা সম্ভব।
এতে পাম তেলে দেশ শুধু সমৃদ্ধই হবে না। বরং বিদেশে তেল রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশে পাম পাষ কেবলই আশাব্যঞ্জকই নয়, উৎসাহব্যঞ্জকও বটে। বর্তমানে সরকার ১২-১৫ হাজার কোটি টাকার তেল আমদানি করে।
দেশে চাষ হলে এই পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। আমদানিকৃত ভোজ্য তেলের ৬০ শতাংশই পাম ওয়েল।
ভোজ্যতেলের দিক থেকে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে পাম তেল। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে পাম চাষের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় বড় প্রকল্প গ্রহণ করা জরুরি।
যাতে যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ ল্যাব স্থাপন, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাম চাষ, তেল উৎপাদন ও বাজারজাত করা যায়। তাতে ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমবে।
পাশাপাশি রফতানি করেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি দেশের অর্থনীতির গতিধারাই পাল্টে দিতে পারে সম্ভাবনাময় পাম।
ইতিমধ্যে রাজশাহীতে পরীক্ষামূলক পাম চাষে সাফল্যের হাতছানি মিলেছে। সেজন্য বিসিএসআইআর গবেষকরা বাণিজ্যিক পাম চাষে সড়ক কিংবা রেললাইনের ধারে, পতিত ও অনাবাদি জমি পাম চাষের আওতায় আনার সুপারিশ করেছেন।
সূত্র জানায়, গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রাজশাহীতে বিসিএসআইআর গবেষণা কেন্দ্র পাম চাষ শুরু করে।
দেশে পাম গাছের প্রজনন, বৃদ্ধি, উৎপাদন এবং ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতেই ওই গবেষণা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল।
তাতে দেখা যায় তিন বছরের মধ্যেই ৩ একর জমিতে রোপণ করা ৩শ’ পাম গাছে ফল এসেছে। তবে পুরোদমে উৎপাদনে আসতে আরও বছর দুয়েক সময় লাগবে।
তবে ইতিমধ্যে প্রকল্পের মেয়াদশেষ হয়ে গেছে। তবে গবেষণা প্রকল্পের ফল খুবই ভাল এসেছে।
প্রয়োজনীয় সরকারি পদক্ষেপ ও সহযোগিতা পেলে হয়তো এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশও হতে পারে ভোজ্যতেল উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ।
সূত্র আরো জানায়, বহু বাংলাদেশী মালয়েশিয়ায় গিয়ে সেখানকার বাণিজ্যিক পাম বাগানে শ্রম দিচ্ছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বাণিজ্যিক পাম চাষে কাজে লাগানো যেতে পারে।
বাণিজ্যিক পাম চাষ, ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বিপণন সম্ভব হলে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিধারা পাল্টে যাবে।
বিশেষ করে রাজশাহী অঞ্চলের মাটি, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা ও গড় বৃষ্টিপাত পাম গাছের বৃদ্ধির জন্য খুবই উপযোগী।
এছাড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগীয় অঞ্চলগুলোর অনাবাদি জমিতেও পাম চাষে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।