বাংলাবাজার পত্রিকা
ঢাকা: করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা। সেই মন্দার আগুনে ঘি ঢেলেছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। বিশ্বের অন্যতম তেল-গ্যাস রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া।
অন্যদিকে ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গম রপ্তানিকারক দেশ। কিন্তু বিশ্ববাজারে সে দেশ থেকে গম আসা প্রায় বন্ধ। ফলে, গমের বাজারের দাম বেড়েই চলেছে এবং বিশ্বের যেসব দেশ তাদের খাদ্যের জন্য ইউক্রেনের গমের ওপর নির্ভরশীল— তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে এই যুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। একই অবস্থা বাংলাদেশেও। চাল ও ভোজ্যতেলসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের মানুষ।
অনেকে আবার তিল তিল করে জমানো টাকা ভেঙে সংসার চালাচ্ছেন। সংসার চালানোর খরচ বইতে না পেরে কেউ কেউ পরিবার-পরিজনকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে মেসে থেকে চাকরি করছেন।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সবার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। যারা বাজারে গিয়ে নিজেদের অসহায় মনে করে, তাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
তিনি বলেন, নতুবা সরকার শুনবে না। আমরা তো প্রতিদিনই এগুলো নিয়ে চিৎকার করছি কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনছে না। জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কয়দিন পর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দাবি তুলবেন তাদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর জন্য।
গোলাম রহমান বলেন, সরকার হয়তো তাই-ই করবে। সাধারণ মানুষের তো আয় বাড়ছে না। কষ্টটা তাদেরই বেশি হবে। সে জন্য নিত্যপণ্যের বাজারে এখনই লাগাম টানতে হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে, খাদ্যদ্রব্য ও খাদ্যবহির্ভূত জিনিসপত্রের ক্রমাগত মূল্য বৃদ্ধির ফলে এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.২৯ শতাংশে। যা গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
গত মার্চ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশের রেকর্ড হয়।
বিবিএস অনুসারে, গ্রামীণ এলাকায় সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ যেখানে শহরাঞ্চলে ছিল ৫.৭৫ শতাংশ।