জিয়াউর রহমান দেশে গুম-খুনের সংস্কৃতি চালু করেছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যারা দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছে। শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপিসহ মিলিটারি ডিক্টেটরদের হাত ধরে যেসব দল তৈরি হয়েছে সেগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা নেই।
এদিকে ২২তম জাতীয় কাউন্সিল সামনে রেখে বৈঠকে বসে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাধারণত জাতীয় সম্মেলনের আগে জাতীয় কমিটির বৈঠক করে আওয়ামী লীগ। এই বৈঠকেই দলের জাতীয় সম্মেলনের বাজেট অনুমোদন করা হয়।
জাতীয় সম্মেলনে পাস করানোর জন্য দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের খসড়া নিয়েও জাতীয় কমিটিতে আলোচনা হয়। এছাড়া সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় এবং শুদ্ধি অভিযান সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয় বৈঠকে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সব সদস্য জাতীয় কমিটিরও সদস্য। প্রতিটি সাংগঠনিক জেলার একজন প্রতিনিধি এই কমিটির সদস্য। এর বাইরে দলের সভাপতি ২১ জন সদস্য মনোনীত করেন। সব মিলিয়ে জাতীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৮০ জন।
বছরে অন্তত একবার জাতীয় কমিটির সভা করার কথা বলা হয়েছে গঠনতন্ত্রে। তবে সভাপতি চাইলে একাধিকবারও করতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন দল। দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দেশের মানুষকে শোষণ-বঞ্চনার হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্য নিয়ে। আর যাদের জন্ম হয়েছে অবৈধভাবে, ক্ষমতা দখল করে, মার্শাল ল’-এর মধ্য দিয়ে তারা আমাদের গণতন্ত্রের ছবক দেয়, পরামর্শ দেয়। তারা নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবে। মার্শাল ল’ দিয়ে, সারা রাত কারফিউ দিয়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, তারা দেশবাসীকে কীভাবে গণতন্ত্র দেয় আর কীসের গণতন্ত্র দেয় আমি বুঝি না। তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে যারা নিজেদের বুদ্ধিজীবী বলে পরিচয় দেন, জ্ঞানী-গুণী বলে পরিচয় দেন, তাদেরও মুখে শুনি- দেশে নাকি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। আমার এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে মিলিটারি ডিক্টেটরদের সময় যারা মার্শাল ল’ দিয়ে রাষ্ট্র চালিয়েছিল, সেটাকেই কি তারা গণতন্ত্র বলতে চান? ওটাই কি তাদের গণতান্ত্রিক ধারা ছিল?
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে বলে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়। হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়। সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। আর সেটা করতে গিয়ে অবৈধ মিলিটারি ডিক্টেটর সেনাবাহিনীর বহু মুক্তিযোদ্ধা অফিসার, হাজার হাজার সৈনিককে হত্যা করে। বিমানবাহিনীর সদস্যদের হত্যা করে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করে। তাদের গ্রেপ্তার করে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর কারাগারে নিক্ষেপ করে। এই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা ক্ষমতায় বসে একটা দলও গঠন করে ফেলে এবং মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।