বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
বাংলাবাজার পত্রিকা.কম মেসির সফরে বিশৃঙ্খলার জের ধরে পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রীর পদত্যাগ বাংলাবাজার পত্রিকা.কম 'মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভাজন করা যাবে না' বাংলাবাজার পত্রিকা.কম স্বাধীনতাবিরোধীরা সাধারণ ক্ষমার সম্মান দিতে জানেনি: এ্যানি বাংলাবাজার পত্রিকা.কম রিমান্ড শুনানিতে মোটরসাইকেলের মালিকানা নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন কবির বাংলাবাজার পত্রিকা.কম রেকর্ড দামে মুস্তাফিজ দল পেলেও অবিক্রীত তাসকিন বাংলাবাজার পত্রিকা.কম রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কলকাতায় মুস্তাফিজ বাংলাবাজার পত্রিকা.কম 'যারা ভোট বাক্স ডাকাতি করবে তারা মানুষের স্বাধীনতা হরণকারী' বাংলাবাজার পত্রিকা.কম পরিবেশ এবং নারী উন্নয়ন গবেষণায় পুরস্কার পেলেন পারভেজ বাবুল বাংলাবাজার পত্রিকা.কম নতুন মুক্তিযোদ্ধা ৮৪, মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী তালিকায় ২৮ জনের নাম বাংলাবাজার পত্রিকা.কম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানের পতাকা আঁকা নিয়ে তোলপাড়

শিক্ষা উপকরণের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি

শিক্ষা উপকরণের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি

নিত্যপণ্যের মতো ধীরে ধীরে বাজারে দাম বেড়েছে সব ধরনের শিক্ষা উপকরণের। বই-খাতাসহ সিংহভাগ উপকরণের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। বেড়েছে স্কুলের পোশাক ও স্কুলব্যাগের দামও। এতে করে ছেলে-মেয়েদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন অভিভাবকরা। প্রভাব পড়েছে বইয়ের দোকান ও স্টেশনারিগুলোতে। আগের তুলনায় তাদের বিক্রি কমেছে কয়েকগুণ।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত ছয় মাসে পর্যায়ক্রমে কাগজ, খাতা, পেন্সিল, ব্যবহারিক খাতা, মার্কার, স্কুল ফাইল, অফিস ফাইল, ক্যালকুলেটর, সাদা বোর্ড, জ্যামিতি বক্স, কলম বক্স, স্কেল, পরীক্ষায় ব্যবহূত ক্লিপবোর্ডসহ সব সবধরনের শিক্ষা উপকরণের দাম বেড়েছে।

বর্তমানে ১২০ পৃষ্ঠার খাতা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০-৫০ টাকা। ১৬০ পৃষ্ঠার খাতা ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়, ৬০-৭০ টাকার ২০০ পৃষ্ঠার খাতা এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৫-১২০ টাকা। ১১০-১২০ টাকার ৩০০ পৃষ্ঠার খাতা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৬০ টাকা। খোলা কাগজ সাইজ ও কোম্পানিভেদে রিমপ্রতি ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

মিনি ফাইল প্রতিটি ২০ থেকে বেড়ে ৩০-৪০ টাকা। জিপার ফাইল ২০ টাকা থেকে বেড়ে মানভেদে ৩০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডজনপ্রতি কলমের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। মার্কার পেন প্রতি ডজন ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে কোম্পানিভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। সাধারণ ক্যালকুলেটর ১২০ থেকে বেড়ে ২৫০ টাকা, জ্যামিতি বক্স ৫৫ থেকে বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্লাস্টিক ও স্টিলের স্কেল ডজনপ্রতি ২০ থেকে ৮০ টাকা বেড়েছে। রাবার প্রতি বক্সে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। 

পুরান ঢাকার চকবাজারে শিক্ষা উপকরণ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, নিত্যপণ্যের মতো যেভাবে শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়ছে আগামী দিনে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। কারণ যেখানে খাদ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছি, সেখানে শিক্ষা ব্যয় অসম্ভব।

রাজধানীর বাংলাবাজার এলাকায় বই কিনতে আসা কলেজ ছাত্র বকুল হোসেন বলেন, বইয়ের দাম যেভাবে বাড়ছে সামনের দিকে বই কিনে পড়া অসম্ভব হয়ে যাবে। অন্তত শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সরকারের উচিত শিক্ষাসামগ্রীর দাম কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অন্যথায় অনেক শিক্ষার্থী মাঝপথে ঝরে পড়বে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

খাতা-কলম কিনতে আসা ফরিদা ইয়াসমিন নামে এক গৃহিণী বলেন, একদিকে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে অন্যদিকে বেড়েছে বই-খাতা-কলমের দাম। বর্তমানে আমার তিন ছেলে-মেয়ে পড়ালেখা করছে। নির্ধারিত আয় দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ দেব নাকি খাবারের জোগান দেব বুঝে উঠতে পারছি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দোকানি জানান, কাগজের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে বইয়ের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। এতে অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত আমাদের বাগবিতাণ্ড হচ্ছে। কমেছে বেচাবিক্রি। ফলে দোকানের ব্যয় পরিশোধে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

আরেকজন দোকানদার বলেন, প্রতিনিয়ত স্টেশনারি মালামালের দাম বাড়ছে। এতে করে আমাদের বিক্রি কমেছে। আগে যেখানে মানুষ এক রিম কাগজ কিনতো সেখানে এখন ১-২ দিস্তা কিনছে। কেউ যদি এক ডজন কলম নিতো এখন নিচ্ছে ৪-৫টা। সব মিলিয়ে আমাদের আয় কমেছে। এভাবে চলতে থাকলে ঋণগ্রস্ত হবো।

বর্তমান বাজারে কাগজের দামের ঊর্ধ্বগতিতে আমাদের ব্যবসায় অনেক প্রভাব পড়েছে। যে কারণে বইয়ের দামও বেড়েছে। কাগজের দাম যদি না কমে তাহলে আমরা ব্যবসায় চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবো। কাগজ আমদানিতে শুল্ক কমাতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ