খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন রোববার। এরইমধ্যে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় বড়দিন উদযাপনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে গেছে। শনিবার রাত ১২টা ১মিনিটে প্রার্থণার মধ্য দিয়ে উৎসব শুরু হবে। সিরাজদিখানের ৩টি গ্রামের প্রায় ৩৪৫টি পরিবারে উৎসবপালনের প্রস্তুতি চলছে।
বড়দিনকে ঘিরে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের শুলপুর খ্রিস্টান পল্লিতে চলছে সাজসজ্জা আর ব্যাপকসব প্রস্তুতি। অতিথি আপ্যায়নে কোনো রকমের ত্রুটি না রাখতে রাখা হচ্ছে রকমারি সব পিঠাপুলির আয়োজন।
বাড়ির সামনে সাজানো হচ্ছে ক্রিসমাস ট্রি। অপেক্ষার দিনক্ষণ শেষ হতে বেশি সময় দেরি নাহলেও জেলার একমাত্র খ্রিস্টান পল্লির পরিবারগুলোতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
সিরাজদিখান উপজেলার শুলপুর ‘সাধু যোশেফ গির্জায়’ সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঝলমলে আলোকসজ্জায়। গির্জার ভেতরে দৃষ্টিনন্দন কুড়েঘরের অভ্যন্তরের মাদার মেরির কোলে যিশুখ্রিস্টের প্রতিচ্ছবি সাজানো হয়েছে। প্রার্থণা করতে আগত পূণ্যার্থীদের আগমন নিরবিচ্ছিন্ন করতে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক দল। সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে চলছে জেলার একমাত্র খ্রিস্টান পল্লি শুলপুর গ্রামে।
সাধু যোশেফ গির্জার স্বেচ্ছাসেবক কর্মী কলেজ ছাত্রী শ্রুতি রোজারিও বলেন, এ বছর বড়দিন উদযাপন আমাদের খ্রিস্টানদের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবারের মতো এবারও গির্জা পরিস্কার পরিচ্ছতার কাজে সাহায্য করতে পেরে আমাদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ দিনটিকে কেন্দ্র করে খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের মধ্যে অনেকের বিয়ের আয়োজন করা হয়। যে কারণে এই দিনকে কেন্দ্র করে সব আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতিও থাকে অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। নির্বিঘ্নে ধর্মীয় ও অন্যান্য উৎসব পালনের জন্য নেয়া হয়েছেকঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
মুন্সীগঞ্জ জেলা খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নয়ন রোজারিও বলেন, পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে সার্বিক সহযোগিতা করছে বলেই আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি। তাছাড়া এ উপজেলায় অন্যান্য ধর্মাবলম্বী লোকজন আমাদের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অনুষ্ঠানকে আরো মুখর ও প্রাণবন্ত করে তুলবে।
খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের পাল পুরুহিত গির্জার ফাদার লিন্টু ডি কস্তা বলেন, বর্ণিলভাবে সাজানো হচ্ছে গির্জা বাড়িঘরে আলোকসজ্জা, গোশালা তৈরি, ক্রিস্টমার্স ট্রি সাজানোসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ইতিমধ্যে গ্রামের বাড়িতে এসেছে তারা।
যিশুরআগমনী বার্তা সবাইকে জানাতে বাড়িতে বাড়িতে চলছে নগরকীর্তন। যীশু মানুষকে দেখিয়েছেন মুক্তি ও কল্যাণের পথ। যীশু খ্রিস্টের জন্মতিথি সবার মাঝে হানাহানি আর বৈষম্য দূর করবে। সমাজে-সমাজে, মানুষে-মানুষে শান্তি স্থাপনের বারতা নিয়ে এবারের বড়দিন উদযাপন করা হচ্ছে বলে জানান, এইধর্মগুরু।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানা ওসি মো. এ কে এম মিনহাজুল হক জানান, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবকে যথাযথভাবে পালনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি।