পৃথিবীতে যে সব দেশ জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবের শিকার তার মধ্যে অন্যতম দেশ বাংলাদেশ। জলবায়ুর বিরূপ আচরণে মানুষের জীবন-জীবিকা, পরিবেশ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এসব ক্ষতি রুখতে প্রয়োজন বহুমুখী উদ্যোগ। যদিও এ বিষয়ে সরকার যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে।
এরইধারাবাহিকতা বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ফান্ড গঠনে নিজস্ব উৎস থেকে এ পর্যন্ত তিন হাজার ৯১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোরও জোরালো সহযোগিতা প্রয়োজন। শনিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত ‘সাসটেইনেবল ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে এসব কথা বলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনেতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান।
দেশ আজ বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার উল্লেখ করে শরিফা খান বলেন, দেশে মাথাপিছু কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ২৯ টনে। বিশ্বব্যাংকের ২০২২ সালে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার না হয় তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের কৃষিখাতের উৎপাদন এক তৃতীয়াংশ কমে যাবে। একই সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির শিকার হবে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা ব্যবসা হারাবেন।
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ড. শামসুল হক বলেন, সবুজ অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজার থেকে অর্থায়ন বাড়াতে হবে। ব্যাংকিং খাত হবে শুধু ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জন্য। এক্ষেত্রে রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠানের কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবির বলেন, অগ্রসরমান অর্থনীতির জন্য সাসটেইনেবল অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ। টেকসই অর্থায়নে বিভিন্ন রকম কলাকৌশল, বিনিয়োগ এবং কার্যকারিতার লক্ষ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এর মূল উদ্দেশ্যে প্রাকৃতিক ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, সাইসেইনেবল ফান্ড চ্যানেল প্রজেক্টগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতি, সমাজ ও রাষ্ট্রে। এখানে করপোরেট ব্যক্তিদের ব্যবসা করা উচিত না। শুধু লাভের দিকে তাকালে হবে না।