রাজধানীর উত্তরখানে রাস্তার গ্যাসের লাইন লিক হয়ে ঘরে আগুন লেগে স্বামী মো. ময়নাল (৪০) ও স্ত্রী মোছা. আনোয়ারার (৩২) মর্মান্তিক মৃ*ত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন স্বামী মো. ময়নাল। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্ত্রী আনোয়ারার মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত মো. ময়নাল জামালপুরের তারাকান্দি উপজেলার মাইজাইলা গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে উত্তরখান মাজার এলাকার ভূঁইয়াবাড়ির মৃত আবদুল হামিদ ভূঁইয়ার বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এ সময় বাসায় না থাকায় রক্ষা পেয়েছে পরিবারটির দুই শিশুসন্তান মনিফা (১২) ও আলিফ (৫)। পরে অগ্নিদগ্ধ দম্পতিকে উদ্ধার করে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
উত্তরখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উত্তরখানে অগ্নিদগ্ধ মো. ময়নাল রাত ১০টার দিকে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্ত্রী আনোয়ারার মৃত্যু হয় বলে উত্তরখান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান জানান।
পাশের নির্মাণাধীন সড়কের নিচে থাকা পাইপলাইনের লিক থেকে আগুন লাগে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সোহেল বলেন, মাটির নিচের গ্যাসের লাইন থেকে হঠাৎ করে রাস্তায় আগুন ধরে যায়। ওই আগুন ময়নালের ঘরের ভিতরেও ছড়িয়ে পড়ে। তারপর আমরা বালু ও পানি মেরে আগুন নিভিয়েছি।
‘আহারে বাড়িওয়ালা ভালা করে গ্যাসের কাজ করালে তো এমন হইত না, এখন বাচ্চা দুইটার কী হবে’ বলে বাড়ির সামনে বসে বিলাপ করে মৃত আনোয়ারার বড় বোন আলেয়া বলেন, আমার বোন গার্মেন্টসে চাকরি করে। বেতন পেয়ে ঈদের জন্য অনেক মার্কেট করেছিল। ঘরে টাকাও ছিল। সব পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। বোনের সারা শরীর পুড়ে গেছে।
গ্যাসলাইনে লিক থেকে আগুন লেগেছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিতাস গ্যাসের উত্তরার ইমারজেন্সি টিমের প্রধান নাজমুল হোসেন বলেন, আমাদের তিতাসের লাইন দেওয়া হয় এসএস পাইপ দিয়ে। আমরা বাড়ির নিচ দিয়ে লাইন দেই না। কিন্তু ওই লাইনটি টানা হয়েছে জিআই পাইপ দিয়ে। তাই আমাদের ধারণা, লাইনটি চোরাইভাবে করা।
তিনি আরও বলেন, অনুসন্ধানে দেখতে পেয়েছি অ্যালবো (দুই পাইপ জোড়া দেওয়ায় ব্যবহৃত) থেকে গ্যাস লিকের সূত্রপাত। আমরা ওয়েলডিং অ্যালবো ব্যবহার করি। কিন্তু এখানে থ্রেড অ্যালবো ব্যবহার করেছে। থ্রেড অ্যালবো ব্যবহার করা হয় বাড়ির ওয়্যারিং কাজের জন্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরখান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, অগ্নিকান্ডে দুইজন নিহতের ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।