ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ও সমাবেশ চলছে। এই প্রতিবাদে ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে বেশ কিছু দোকান, রেস্তোরাঁ ও সুপারশপে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার মধ্যে দোকান ও সুপারশপগুলোতে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি না করার জন্য ব্যবসায়ীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) থেকে দেশের বিভিন্ন শহরে ব্যবসায়ীরা এমন হুমকির মুখে পড়ছেন, যেখানে বলা হচ্ছে, যদি কোনো দোকানে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি হয়, তবে তা ভেঙে ফেলা হবে। দোকানগুলোর সামনে ইসরায়েলি পণ্যের ছবি সহ লিফলেটও দেওয়া হচ্ছে। একাধিক দোকান ও সুপারশপে কর্তৃপক্ষকে এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে, এবং সেগুলো সরিয়ে না নিলে শপ ভাঙচুরের শিকার হতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা জানান, তারা দেশের অর্থনীতির জন্য বিনিয়োগ করেছেন এবং এ ধরনের হামলা তাদের ব্যবসা ও জীবিকার জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষত, ইসরায়েলি পণ্য নয় এমন বিদেশি পণ্যগুলোও দোকান থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় অবস্থিত এক সুপারশপের ম্যানেজার জানান, কিছু টিনএজ ছেলে এসে তাদের ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি বন্ধ করতে বলেছে। এমনকি হুমকি দিয়েছে, সেগুলো সরানো না হলে তাদের আউটলেট চালাতে দেওয়া হবে না। এ ঘটনা শুধু ওই সুপারশপে নয়, আশপাশের আরও দোকান ও সুপারশপে ঘটেছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা, এবং এ বিষয়ে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।
এদিকে, বাটা, কেএফসি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের আউটলেটে হামলার ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা কোনো রাজনৈতিক সংঘাতে জড়িত নন। বাটা জানায়, এটি একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এবং ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘাতের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তাদের কাছে কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে, তারা দোকান ও সুপারশপে হামলা রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি ইনামুল হক সাগর জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে যদি এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তবে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।