শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত, কঠোর হচ্ছে বিজিএমইএ

পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত, কঠোর হচ্ছে বিজিএমইএ

নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও জোট। ১২ হাজার ৫০০ টাকার বদলে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। আন্দোলনে তিন শ্রমিক নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বিচার দাবি করেন তাঁরা।

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসব সংগঠন ও জোটের নেতারা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। প্রেসক্লাবের সামনের তোপখানা সড়কের কদম ফোয়ারা অংশ থেকে পুরানা পল্টন মোড় ঘুরে যায় বিক্ষোভ মিছিলটি। বেলা পৌনে ১১টার দিকে পল্টন মোড়ের দিক থেকে প্রথমে মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে আসে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট। পরে সংগঠনটি প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করে।

এদিকে, নতুন বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যান করে শ্রমিকদের যে আন্দোলন চলছে, তার বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। পোশাকশিল্প মালিকদের এক সমন্বয় সভায় সব কারখানায় নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখা, কারখানায় ভাঙচুর হলে প্রয়োজনে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সমাবেশে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা বলেন, শ্রমিকেরা ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা প্রত্যাখ্যান করেছেন। অবিলম্বে সর্বনিম্ন মজুরি ২৩ হাজার টাকা ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়। এতে শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপন ও সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১১টার দিকে পুরানা পল্টন থেকে প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসে বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশন নামের একটি সংগঠন। তারাও ১২ হাজার ৫০০ টাকার ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে। এ সমাবেশে সংগঠনের নেতা তোফাজ্জল হোসেনের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াসিন ও সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত।

অন্যদিকে শ্রমিক ফেডারেশনের দাবি ছিল শ্রমিকদের মজুরি ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ। প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক ফেডারেশনের করা সমাবেশে নেতারা বলেন, শ্রমিকেরা ন্যায্যভাবে যখন মজুরির জন্য আন্দোলন করছেন, তখন সরকার মালিকদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের ওপর গুলি চালাচ্ছে। শ্রমের বিনিময়ে মজুরি চেয়ে শ্রমিকেরা গুলি পাচ্ছেন। ফেডারেশনের নেতারা আন্দোলনে নিহত তিন শ্রমিকের কথা উল্লেখ করে বিচার চান। নিহত তিনজন হলেন—শ্রমিক আঞ্জুয়ারা, রাসেল ও ইমরান।

বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রেসক্লাব্লসংলগ্ন ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে সমাবেশের জন্য দাঁড়ান ১১টি শ্রমিক সংগঠনের জোট গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের নেতারা। আগের দুটি সংগঠন সমাবেশ শেষ করলে তাঁরা প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সমাবেশ শুরু করেন। আন্দোলনে নিহত তিন শ্রমিকের কথা উল্লেখ করে তাঁরা বিচার দাবি করেন। এ ছাড়া সবশেষ নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান, ১৩/১-এর ধারা বন্ধ করে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ এবং অবিলম্বে মজুরি পুনর্বিবেচনা করে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানানো হয়।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন