শনিবার, ৩ মে, ২০২৫

গরমে আংটি-চুড়ি থেকে র‍্যাশ সারাতে করণীয়

গরমে আংটি-চুড়ি থেকে র‍্যাশ সারাতে করণীয়

সকাল হতে না হতেই তেজ ছড়াচ্ছে সূর্য। বেলা গড়াতেই তার তাপ বাড়ছে। ১১টার পর বলছে লু। গরম তাপ আর বাতাস গায়ে লাগতেই যেন পুরো শরীর জ্বলে যাচ্ছে। তাপমাত্রার এই আধিক্যে বেহাল দশা হচ্ছে ত্বকের। বিশেষ করে যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের গরমে ব্রণ-ফুসকুড়ির মতো সমস্যা হয়। 

অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে গরমে হাতের আংটি, চুড়ি। ঘড়ির বেল্ট থেকেও চুলকানি হয়। দুই হাত ভরে যায় ফুসকুড়িতে। ত্বক হয়ে পড়ে খসখসে। অনেকের আবার আঁশের মতো চামড়া উঠতে শুরু করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এমন সমস্যাকে ‘ডাইশিড্রোটিক এগজিমা’ বলা হয়। শুধু ওষুধ বা মলমে এটি সারে না। 

চিকিৎসকরা বলছেন, ‘মেটাল অ্যালার্জি’ থাকলে সোনা বা রূপা অথবা জাঙ্ক গয়না থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। ‘জার্নাল অফ কসমেটিক ডার্মাটোলজি’-র তথ্য অনুযায়ী, সূর্যের আলোর সংস্পর্শে থেকে আসার পর ত্বকে লাল লাল র‌্যাশ দেখা দিলে তা ‘সান অ্যালার্জি’ হিসাবে ধরে নেওয়া যেতে পারে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ধাতব গয়না থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। এই সমস্যাকে 'ফোটোসেনসিটিভ ডিজঅর্ডার' অথবা 'ফোটোডার্মাটোস'-ও বলা হয়।

অনেকের আবার গরমে এগজিমার সমস্যা হয়। আঙুলের মাঝের ত্বকে, গলা, হাতের কনুই, হাতের কব্জিতে ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়া, চুলকানি, খসখসে হয়ে যাওয়া, ফোস্কা পড়া এর অন্যতম লক্ষণ। এই সমস্যাকে বলা হয় 'অ্যাটপিক ডার্মাইটিস'। 


এমন সমস্যা হলে গরমে কষ্ট আরও বাড়ে। স্টেরয়েড জাতীয় ক্রিম ব্যবহারে সাময়িক সমাধান মিললেও ত্বকের সংক্রমণ ঠেকাতে ঘরোয়া উপাদানেই ভরসা রাখতে হবে। কারণ, ঘরোয়া উপকরণে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার ভয় কম থাকে। 


গরমে ত্বকের অ্যালার্জি বা এগজিমা থেকে বাঁচার উপায় 


কম ক্ষারযুক্ত সাবান


ক্ষারযুক্ত সাবান ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এসময় ভেষজ সাবান ব্যবহার করাই ভালো। অতিরিক্ত ক্ষার দেওয়া সাবান ব্যবহার করলে এবং দিনে বেশি বার ব্যবহার করলে তা থেকে অ্যালার্জির সমস্যা বাড়বে।


ল্যাভেন্ডার অয়েল 


ত্বকের জ্বালা, চুলকানি, র‌্যাশ দূর করতে পারে ল্যাভেন্ডার অয়েল। সোরিয়াসিসের সমস্যা থাকলেও এই এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এক কাপ পানিতে ৫-৬ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে তুলার সাহায্যে র‌্যাশের জায়গায় লাগিয়ে রাখুন। এতে জ্বালা-চুলকানি অনেকটাই কমবে।


পেপারমিন্ট তেল


যেকোনো ব্যথা, ক্ষত সারাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে পেপারমিন্ট তেল। যেখানে জ্বালা বা চুলকানি হচ্ছে, সেই জায়গায় এই তেল মালিশ করুন। এতে প্রদাহ কমে যাবে চটজলদি। ব্যথার স্থানে শীতল অনুভূতি এনে দেয় এই তেল।


অ্যাপল সিগার ভিনেগার


এক কাপ পানিতে ২-৩ ফোঁটা অ্যাপল সিদার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। তুলার সাহায্যে এই মিশ্রণ নিয়ে র‌্যাশের জায়গায় লাগাতে হবে। এতে খুব তাড়াতাড়ি প্রদাহ কমে যাবে।


শিয়া বাটার মাস্ক


ত্বকের চুলকানি কমাতে ব্যবহার করতে পারেন শিয়া বাটার। আধা কাপ শিয়া বাটারের সঙ্গে সমপরিমাণ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণে এক কাপ পানি দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। ফুটে গেলে ঠান্ডা করে তাতে ১ চা-চামচ ভিটামিন এ তেল এবং কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে নিন। গোসলের আগে এই মিশ্রণ নিয়মিত ত্বকে মাখলে এগজিমা বা র‌্যাশের সমস্যা কমে যাবে। ত্বকের অ্যালার্জিও সেরে যাবে।


এসবের পাশাপাশি এই গরমে সুতির পোশাক পরুন। অ্যালার্জির সমস্যা হলে কিছুদিন আংটি, চুড়ি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। বাইরে থেকে ফিরে ত্বকে বরফ ঘষুন। 

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ