বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫

আর্সেনালকে বিদায় করে ফাইনালে পিএসজি

আর্সেনালকে বিদায় করে ফাইনালে পিএসজি

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আর্সেনালকে ২-১ গোলে হারিয়েছে পিএসজি। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল দ্বিতীয় বারের মতো নিশ্চিত করেছে ফরাসি জায়ান্টরা। পুরো ম্যাচে বল দখলে একটু এগিয়ে থাকা আর্সেনাল গোলের জন্য মোট শট নেয় ১৯টি, যার মধ্যে চারটি ছিল লক্ষ্যে। আর পিএসজি ১১টি শটের ছয়টি লক্ষ্যে রাখতে পারে। 

বুধবার (৭ মে) পার্ক দ্য প্রিন্সেসে যদিও সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে গোলশূন্য ড্র-ই যথেষ্ট হলেও আর্সেনালের মাঠ এমিরেটসে প্রথম লেগে ১-০ গোলে জয় নিয়ে ফিরেছিল পিএসজি। ঘরের মাঠে  সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে ২-১ ব্যবধানে জিতে, দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলের অগ্রগামিতায় শিরোপার মঞ্চে জায়গা করে নিল লুইস এনরিকের দল।

প্রথম লেগের মতো আজও পিএসজি গোল পেয়ে যায় প্রথমার্ধে, ফাবিয়ান রুইসের নৈপুণ্যে। পরে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আশরাফ হাকিমি। পুরো প্রথমার্ধেই বল দখলে বেশ পিছিয়ে ছিল পিএসজি। যদিও ম্যাচের শুরুতে পায়ে বলই রাখতে পারছিল না স্বাগতিকরা, তবে সপ্তম মিনিটে মার্টিন ওডেগার্ডের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরালো শট লাফিয়ে দুর্দান্তভাবে ঠেকিয়ে দেন পিএসজির এই ইতালিয়ান গোলরক্ষক। 

ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটেই দোন্নারুমা এভাবে ডেকলান রাইস-গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লিদের একের পর এক আক্রমণ ভেস্তে দেন। পিএসজির শটও ছিল কম, তবে ৫ শটের মধ্যে ৩টাই তারা লক্ষ্যে রাখতে পারে। বিপরীতে মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা ১০টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয় মাত্র দুটি। এর মাঝেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের সামনে। ১৭ মিনিটে খিচা কাভারৎস্খেলিয়া জোরালো শট নেন বাঁ প্রান্ত থেকে। ডেভিড ডি রায়া নাগাল পাননি সেটি, তবে সেকেন্ড বারে বল গিয়ে আঘাত করে। 

এরপর ২৭তম মিনিটে ম্যাচে লিড নেয় পিএসজি। ফ্রি-কিক থেকে উড়ে আসা বল আরেক সতীর্থের মধ্যস্থতায় পেয়ে যান ফ্যাবিয়ান রুইজ। প্রথমে বলটি বুক দিয়ে নামিয়ে এনে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড বক্সের মাথা থেকে বাম পায়ে জোরালো শট নেন। দুরন্ত গতির সেই বল ঠেকাতে লাফিয়েও নাগাল পাননি আর্সেনাল গোলরক্ষক ডি রায়া। ম্যাচে ১-০ এবং এগ্রিগেটে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় লুইস এনরিকের দল। 

এতে পিএসজিও হয়ে ওঠে আরও আত্মবিশ্বাসী। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা প্রতিপক্ষকে আরও কোণঠাসা করে ফেলতে পারত। তবে ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে বল পেয়েও প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি বার্কোলা। বিরতির আগে বাকি সময়ে বুকায়ো সাকা, মিকেল মেরিনো ও রাইসরা সমতায় ফেরার মরিয়ার চেষ্টা চালায়। তবে প্রতিবারই তাদের হতাশা উপহার দেয় পিএসজি ডিফেন্ডার নুনো মেন্দেস ও আশরাফ হাকিমিরা। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ানোর মিশনে নামে পিএসজি, যদিও তাদের কার্যকরী আক্রমণ ঠিক ছিল না। 


তবে ৭৬ মিনিটে আর্সেনাল ডিফেন্ডারদের ভুলে তাদের বক্সেই বল পেয়ে যান হাকিমি। নিকট দূরত্ব থেকে এই মরক্কান ডিফেন্ডারের শট জাল খুঁজে নেয়। এগ্রিগেটে ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে ম্যাচে তখনই হেরে বসেছিল আর্সেনাল। তবে মিনিট চারেক বাদে মার্কিনিয়োসের অনিয়ন্ত্রিত দৌড়ে তাকে বিট করে বল নিয়ে যান লিয়েন্দ্রো ট্রোসার্ড। তার বাড়ানো বল প্রায় আটকে ফেলেছিলেন দোন্নারুমা, তবে হাত ফসকে গেলে পেয়ে যান পাশেই থাকা সাকা। বলকে জালে ঠেলে দিয়ে এই ইংলিশ তারকা ব্যবধান কমান। ৮০ মিনিটে আরেকটি বড় সুযোগ আসে সাকার সামনে, তবে ফাঁকা বার পেয়েও তিনি বল শূন্যে তুলে দেন।


এরপর শেষ ১০ মিনিটেও আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ জারি ছিল। তবে ঠিক প্রতিপক্ষের মাথাব্যথার কারণ হতে পারল না কেউই। তবে ঠিকই দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ ব্যবধানের জয়ে মিউনিখের টিকিট নিশ্চিত করেছে এনরিকের পিএসজি। ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠল পিএসজি। শিরোপা লড়াইয়ে ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। তবে প্রথমবার ফাইনালে উঠেছিল ২০২০ সালে, সেবার বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে স্বপ্ন ভেঙেছিল তাদের। অধরা সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই আগামী ৩১ মে মিউনিখে মাঠে নামবে পিএসজি।


সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ