ইসরাইল গাজায় হামলা আরো জোরদার করেছে। গাজায় ৭ই অক্টোবরের ইসরাইলের নির্বিচার হামলার দুই মাসেরও বেশি সময় পর ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের কমিশনার জেনারেল ফিলিপ্পে লাজ্জারিনি গাজাকে মর্ত্যের নরক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, গাজায় ত্রাণ বিতরণের মতো পরিস্থিতিও নেই। এমন সময় লাজ্জারিনি এমন মন্তব্য করলেন, যখন গাজা নগরীর কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেন, কয়েক দিন ধরে অবরুদ্ধ করে রাখা ও হামলা চালিয়ে আসার পর দখলদার বাহিনী কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অভিযান শুরু করেছে। স্বাস্থ্যকর্মীসহ পুরুষদের হাসপাতাল চত্বরে ঘিরে রেখেছে সেনারা।’
এর আগে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর (এসিএইচএ) জানিয়েছিল, হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে হামলায় দুই মা নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত প্রায় তিন হাজার মানুষ সেখানে আটকা পড়েছে। সেখানে খাবার, পানি ও বিদ্যুতের চরম সংকট চলছে।
ইসরাইলি বাহিনী নির্বিচার হামলা চালিয়ে গাজার উত্তরাঞ্চল গুঁড়িয়ে দেয়ার পর দক্ষিণ গাজাতেও একের পর এক হামলা চালাতে শুরু করে। এর আগে উত্তরাঞ্চলে হামলার সময়ে সেখানকার বাসিন্দাদের দক্ষিণ গাজায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরাইলি বাহিনী। গত সপ্তাহে দক্ষিণ গাজার প্রধান শহর খান ইউনিসে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরাইল। নগরীর কেন্দ্রস্থল লক্ষ্য করে ইসরায়েলি ট্যাংক গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
এক বাসিন্দা জানান, মঙ্গলবার সকালে হামাস নেতা ইয়াহিয়া আল-সিনওয়ারের বাড়ির সড়কে ট্যাংক চলাচল করতে দেখা গেছে। বয়োবৃদ্ধ বাসিন্দা তাওফিক আবু ব্রেইকা বলেন, কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই খান ইউনিসের আবাসিক এলাকাগুলোতে সোমবার নতুন করে হামলা চালানো হয়। এতে বহু ভবন ধসে পড়েছে। অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বে বিবেকবোধ হারিয়ে গেছে। কোনো ধরনের মানবিকতা কিংবা নীতি-নৈতিকতাবোধ অবশিষ্ট নেই। এ নিয়ে তৃতীয় মাসে আমরা মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের সম্মুখীন। এটা জাতিগত নিধন। গাজা উপত্যকাকে ধ্বংস করা এবং গোটা জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত করাই ইসরাইলের উদ্দেশ্য।