জুলাই ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য ঢাকায় আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। মিরপুর ৯ নম্বরে সরকারি জমিতে নির্মিতব্য ১,৫৬০টি ফ্ল্যাট বিনামূল্যে প্রদান করা হবে আহতদের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১,৩৪৪ কোটি টাকা, যা সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত হবে।
প্রত্যেকটি ফ্ল্যাটের আয়তন ধরা হয়েছে ১,২৫০ বর্গফুট। থাকছে দুটি শয়নকক্ষ, ড্রয়িংরুম, লিভিংরুম, খাবার কক্ষ, রান্নাঘর এবং তিনটি শৌচাগার। গুরুতর আহত বা পঙ্গুদের জন্য আলাদা কক্ষ থাকবে, যাতে চলাচল ও ব্যবহারে বিশেষ সুবিধা থাকবে।
জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির জানান, ‘এখন আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে অবকাঠামো নির্মাণ। চার বছরের মধ্যে প্রকল্প শেষ করতে চাই। কারা ফ্ল্যাট পাবেন, তা ঠিক করবে জুলাই অধিদপ্তর, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যৌথ কমিটি।’
এর আগে জুলাই শহীদ পরিবারের জন্য মিরপুর ১৪ নম্বরে পৃথক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যেখানে ৮০৪টি ফ্ল্যাট নির্মিত হবে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬২ কোটি টাকা। প্রতিটি ফ্ল্যাট হবে ১,৩৫৫ বর্গফুটের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মিরপুর ৯ নম্বরের জমিটি নিচু হওয়ায় অতীতে ভবন নির্মাণ সম্ভব হয়নি। এবার জমি ভরাটে ব্যয় হবে প্রায় ১২ কোটি টাকা। যদিও প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫০ কোটি টাকার বেশি হওয়ায় সমীক্ষা বাধ্যতামূলক হলেও এই প্রকল্পে তা করা হয়নি।
সরকারি তালিকা অনুযায়ী, আন্দোলনে ১,৪০১ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৪৯৩ জন ‘অতি গুরুতর’ ও ৯০৮ জন ‘গুরুতর আহত’ হিসেবে চিহ্নিত। ১৯ জন সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন এবং ৩৮২ জন একটি চোখ হারিয়েছেন। অনেকে পা হারিয়েছেন বা পঙ্গু হয়ে গেছেন।
প্রকল্পটির বিষয়ে ৭ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি সভায় আলোচনা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, চলতি জুলাই মাসেই একনেক সভায় প্রকল্প দুটি অনুমোদন পাবে। ২০২৯ সালের মধ্যে প্রকল্প সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।