গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষ ও সহিংসতায় ৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহত তিন জন হলেন- গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮) ও টুঙ্গীপাড়ার সোহেল মোল্লা (৪১)। আরেকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে গোপালগঞ্জ সদরের ইমনের (২৪) নাম নিহত হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বিবিসি নিউজ চারজন নিহত হওয়ার খবর প্রকাশ করেছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জনের লাশ সদর হাসপাতালে রাখা আছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। নিহতদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহত দীপ্ত সাহার চাচা জানান, ‘দীপ্ত দুপুরের খাবার খেয়ে দোকানে যাচ্ছিলেন। শহরের চৌরঙ্গীতে তাঁর পেটে গুলি লাগে।’ নিহত রমজান কাজীর বাবা কামরুল কাজী বলেন, ‘আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলছে। আমার ছেলে তো কোনো দোষ করেনি। আমি আমার সন্তানকে কোথায় পাব?’
এনসিপির নেতারা দাবি করেন, হামলায় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীরা জড়িত ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশ শেষ হতেই একদল ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
এ সময় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ করেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল সবকিছু ঠিক আছে, কিন্তু এসে দেখি পুরো পরিস্থিতি বিপরীত।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ছিল।’
বেলা পৌনে ২টার দিকে হামলাকারীরা সমাবেশস্থলে ঢুকে মঞ্চে ভাঙচুর চালায়, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। পুলিশ সদস্যরা মঞ্চ ছেড়ে আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। পরে জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশ ও এনসিপি নেতা-কর্মীরা ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পিছু হটে।
এরপর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে ফেরার পথে আবারও হামলার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী অভিযান চালায়।
নিজস্ব প্রতিবেদক | বাংলাবাজার পত্রিকা.কম



















