আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ দুই শতাধিক প্রার্থীকে শোকজ করে কারণ দর্শানোর জন্য তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সতর্কবার্তাকে পাত্তা না দেয়া প্রার্থী ও সমর্থকের বিরুদ্ধে মামলাও করতে যাচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। আর কমিশনের নেয়া এ ব্যবস্থা নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সহায়ক হবে বলছেন বিশ্লেষকরা।
কমিশন সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনে ২০২ জন প্রার্থী ও তাদের সমর্থককে শোকজ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর জন্য তলব করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য রয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্বাচন কর্মকর্তাদের মামলা কারারও নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
চট্টগ্রাম-১৬ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও ঝিনাইদহ-১ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল হাইসহ আরও কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইসির মামলায় নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন ২০ দিন কারাভোগ করেছেন। এছাড়া বরগুনা-১ আসনের বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী গাজীপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকির এপিএস মো. মাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুসন্ধান কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে ইসির অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করতে নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হবে।
এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোঃ শাহনেওয়াজ গণমাধ্যমে বলেন, নির্বাচন কমিশন দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করে চলেছে। ভোটের ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত এমন কঠোর অবস্থানে থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে বাধ্য। যেহেতু কমিশন বারবার নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন করার আশ্বাস দিচ্ছে ও ব্যবস্থা নিচ্ছে। জনগণের উচিত হবে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া এবং নিজেদের অধিকার অনুযায়ী ভোট দেয়ার সুযোগটা নেয়া।
নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা জানান, প্রার্থীদের আচরণবিধি মানাতে আরও কঠোর হচ্ছে ইসি। এরই মধ্যে অনেক প্রার্থীকে আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে শোকজ এবং সতর্ক করা হয়েছে। আইন অমান্য করে কেউ পার পাবে না। ক্রমান্বয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, এদিন থেকেই নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। যা আগামী ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। আর আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।