রাজধানীর ডেমরার মধ্য হাজীনগর এলাকায় একটি ছয়তলা ভবন হেলে পড়েছে পাশের সাততলা ভবনে। ভবনটির গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৮ আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান।
রোববার বিকালে ‘ম্যানশন ভবন’ নামে ওই বিল্ডিং থেকে সবাইকে নিরাপদে বের করে আনা হয়েছে। এদিন মো. খলিলুর রহমান, ডেমরা থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভবনটি পরিদর্শন করেন।
বিদেশে রক্ত পানি করা উপার্জনের টাকায় এ ‘ম্যানশন ভবন’ নির্মাণ করেছি। এটাই আমার একমাত্র সম্বল। কোনো ত্রুটি ছিল না নির্মাণে। এখন ভবনটা নিয়ে কী করব বুঝতে পারছি না। চোখের সামনে সবকিছু ভেঙে পড়ছে।
এ সময় ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তবে হেলে পড়া ভবনের পাশের সাততলার ভবনবাসীরা চরম আতঙ্কে রয়েছেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ডিএসসিসির ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী মোয়াজ্জেম আলী স্কুল এবং বাইতুল কাওছার জামে মসজিদ সংলগ্ন হোল্ডিং নং-১০৬ এ অবস্থিত ওই হেলে পড়া ভবন। এই ভবনের মালিক শহীদ মিয়া নামে এক প্রবাসী। এটি হেলে পড়েছে পাশের হোল্ডিং নং-১০৫ এ অবস্থিত হাবিবুর রহমান সোহাগের সাততলা ভবনের দিকে।
এলাকাবাসী জানান, গত কয়েকদিন ধরে ভবনটি সামান্য হেলেছিল। তবে রোববার দুপুর থেকে স্পষ্টভাবে পাশের ভবনের গায়ে ঠেকে গেছে ওই ভবন। মধ্য হাজীনগরের প্রবেশ মুখে হওয়ায় শুধু ভাড়াটিয়াই নয়, সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষও এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। ভবনটি ২০০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন সারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে নির্মাণ করা হয়।
শহীদ মিয়া জানান, বিদেশে রক্ত পানি করা উপার্জনের টাকায় এ ‘ম্যানশন ভবন’ নির্মাণ করেছি। এটাই আমার একমাত্র সম্বল। কোনো ত্রুটি ছিল না নির্মাণে। এখন ভবনটা নিয়ে কী করব বুঝতে পারছি না। চোখের সামনে সবকিছু ভেঙে পড়ছে।
এ বিষয়ে খলিলুর রহমান বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় আমরা প্রাথমিকভাবে নোটিশ দিয়ে ভবনবাসীদের সরিয়েছি। এখন মালপত্র সরানো হচ্ছে। আর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আগেই আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ভবনের মালিক যদি কোনো স্বীকৃত ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্টের মাধ্যমে ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেন, তখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তা না হলে ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হিসেবেই থাকবে।
এ বিষয়ে রাজউকের অঞ্চল-৮ এর অথরাইজড অফিসার জান্নাতুল মাওয়া বলেন, ইতিমধ্যে ভবনবাসীদের নিরাপদে বের করা হয়েছে। পরবর্তীতে রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী ঝুকিপূর্ণ হিসেবে ভবন সিলগালাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডেমরা থানার ওসি মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে সর্বক্ষণ ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।