শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

অবরোধ হরতালে ২৮৯ অগ্নিসংযোগ

অবরোধ হরতালে ২৮৯ অগ্নিসংযোগ

❏ অসহযোগেও অবরোধ, রাজপথে যানবাহনের চাপ

নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির ডাকা চলমান অবরোধ ও হরতালে সারাদেশে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৮৯টি অগ্নিসংযোগের খবর পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।রোববার ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক দলের ডাকা অবরোধ ও হরতালে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৮৯টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৮৫টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অগ্নিসংযোগ করা যানবাহনের মধ্যে ট্রাক ৪৫টি, কাভার্ডভ্যান ২৩টি, মোটরসাইকেল ৮টি ও অন্যান্য গাড়ি ২৯টি।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টার চারটি যানবাহনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪টি অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা শহরে ৩টি ও কুমিল্লায় একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এই আগুন নির্বাপণ করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ৮টি ইউনিট ও ৪০ জন কাজ করেছেন।

এদিকে ক্ষমতাসীনদের পদত্যাগ ও ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিলের দাবিতে অসহযোগ আন্দোলন পালন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এর আগে একই দাবিতে দীর্ঘদিন হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করলেও অসহযোগ কর্মসূচির মধ্যে দলটির ডাকা প্রথম অবরোধ ছিল রোববার। তবে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও রাজপথে দলটির নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল না। অপরদিক সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গাড়ির চাপ ছিল স্বাভাবিক দিনের মতো। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

মহানগরের ব্যস্ততম এলাকা মগবাজার। এই এলাকার মানুষের চিরচেনা ব্যস্ততা ছিল স্বাভাবিক দিনের মতোই। রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি ও গণপরিবহনের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মগবাজার সিগনালে দু’পাশে গাড়ির দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা গেছে। যানজটে আটকে রয়েছেন বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটে চলা মানুষেরা। তবে এই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এছাড়া সড়কে ছিল পুলিশের টহল টিম। তবে কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে মগবাজার ওয়ারলেসে। ফ্লাইওভারের শেষ প্রান্তে অন্য দিনগুলোতে গাড়ির দীর্ঘ লাইন থাকলেও গাড়ির চাপ কিছুটা কম ছিল। এ সময় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে যাত্রীদের।

একই চিত্র গুলিস্তান, পল্টন ও শাহবাগ এলাকায়। সেখানে গণপরিবহনের বেশ চাপ ছিল। স্বাভাবিক সময়ের মতোই যানজট দেখা গেছে সড়কগুলোতে। অবশ্য বাংলামোটর, কারওয়ান, শাহবাগ ও আগারগাঁওয়ের সড়ক অনেকটাই ফাঁকা।  

এদিকে অবরোধকে কেন্দ্র করে সড়কে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের তেমন উপস্থিতি চোখে পড়েনি। সকাল থেকে ফার্মগেট, কাফরুল ও দক্ষিণখানসহ বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিল ও পিকেটিং করছে তারা। পল্টন ও প্রেসক্লাব এলাকায় বিক্ষোভ করছে সমমনা ছোট দলগুলো।

অপরদিকে গণপরিবহন চললেও চালক ও যাত্রীদের চোখে-মুখে ছিল অতঙ্কের ছাপ। গুলিস্তান-সদরঘাটগামী আজমেরি গ্লোরি বাসেরে এক চালকের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, অবরোধের তেমন প্রভাব নেই। রাস্তায় অনেক গাড়ি। প্রায় প্রতিটি মোড়েই যানজটের কবলে পড়তে হয়েছে। তবে যাত্রীসহ সকলের মধ্যেই এক ধরনের ভয় কাজ করছে। অবরোধের আগে ও অবরোধের দিনে একাধিক গাড়ি পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। ফলে এটা নিয়ে কিছুটা ভয় কাজ করছে।

গুলিস্থানগামী ফাহিম হাসান বলেন, যত যাইহোক আমাদের তো কাজে যেতে হয়। হরতাল-অবরোধ বা অসহযোগ যাই চলুক না কেন আমাদের অফিস করতে হবে। বিভিন্ন কাজে বাইরে বের হতে হবে। ফলে আমরা বের হচ্ছি। কিন্তু বিভিন্ন সময় আগুনের ঘটনায় কিছুটা ভয় কাজ করছে।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন