❏ ভোট চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজধানীসহ সারাদেশে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা। বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জে পাড়া-মহল্লায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাইছেন। সূর্য উঠার আগেই ভোটারদের দরজায় কড়া নাড়ছেন ভোট চেয়ে। দলীয় প্রার্থীদের তুলনায় পিছিয়ে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও। সবার প্রত্যাশা, ভোট সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের বাকী আর ১২ দিন। প্রচারপ্রচারনায় ব্যস্ত সময় কাটছে প্রার্থীদের।
সাদা-কালো পোস্টারে সয়লাব চারপাশ। সারাদেশে ৩০০ আসনের সব প্রার্থীই মাঠে নেমেছেন। জমজমাট প্রচারে চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও রাজশাহীসহ বিভিন্ন শহরে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বিভাগীয় ও জেলাশহরগুলোর মতো ৬৪ জেলার প্রতিটি গ্রামও জেগে উঠেছে ভোটের ডাকে। ৭ জানুয়ারির জয়ই এখন সব প্রার্থীর একমাত্র লক্ষ্য।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশী-বিদেশী সমালোচনার জবাব দিতে কঠোর থেকে কঠোর হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। যেখানেই অনিয়মের অভিযোগ ওঠে-সেখানেই অ্যাকশান নেয়া হচ্ছে। ছাড় দেয়া হচ্ছে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিরোধীদলকেও। নির্বাচন দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে নেয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একগুচ্ছ পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এসব পরিপত্রে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্বাচনে কোন সংস্থা কীভাবে কোথায় কি দায়িত্ব পালন করবে, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে। ফৌজদারি কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনের বিধান অনুসারে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ারের ৭ম ও ১০ম অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা বা থানায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনী অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা প্রদান করবে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা, উপজেলা, মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। রিটার্নিং অফিসার বা প্রিসাইডিং অফিসারের চাহিদার প্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোটগণনা কক্ষের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে।
সশস্ত্র বাহিনীর টিমের সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করা হবে এবং আইন, বিধি ও পদ্ধতিগতভাবে কার্যক্রম গৃহীত হবে। উপকূলবর্তী এলাকায় নৌ-বাহিনী প্রয়োজন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে। ঝুঁকির বিবেচনায় রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে আলোচনাক্রমে প্রতিটি জেলায় নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা কম-বেশি করা যাবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সডক, মহাসড়কসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। বিমান বাহিনী প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও বাহিনীসমূহের অনুরোধে উড্ডয়ন সহায়তা প্রদান করবে। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে এলাকাভিত্তিক মোতায়েন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে।
এ সময়ে বিজিবি, র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনী কী দায়িত্ব পালন করবে তা জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর পাশাপাশি যে দায়িত্ব পালন করবে বিজিবি, কোস্ট গার্ড, আর্মড পুলিশ ও আনসার সেটারও দিকনির্দেশনা জারি করা হয়েছে। বিজিবি, কোস্ট গার্ড, আর্মড পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। জেলা, উপজেলা, থানাসমূহে বিজিবি এবং উপকূলীয় এলাকাসমূহে কোস্ট গার্ড দায়িত্ব পালন করবে। রিটার্নিং অফিসারের চাহিদা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবে। বিজিবি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ও ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করতে পারবে। রিটার্নিং অফিসার ও প্রিসাইডিং অফিসারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোটগণনা কক্ষের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে। এদের সঙ্গে র্যাব মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে ও নির্বাচনী এলাকায় সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবে।