দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ব্যারিস্টার এম শাহজাহান ওমরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম মনিরুজ্জামান মনির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে রাজাপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কনভেনশন সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। এদিকে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. এস এম মুসতানজিদও সরে দাঁড়ানো ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি কুষ্টিয়া নাগরিক কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের কুষ্টিয়া জেলা শাখার (বিএমএ) সভাপতি এবং কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ। মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘোষণা নেন।
এরআগে সংবাদ সম্মেলনে ঝালকাঠি-১ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান বলেন, আমি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ আসনের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আমার মার্কা ঈগল। আজ আমি আমার ব্যক্তিগত কারণে স্বজ্ঞানে, স্বেচ্ছায় নির্বাচন থেকে সরিয়ে দাঁড়াচ্ছি। সাথে সাথে আমার শুভাকাঙক্ষী ও সম্মানিত ভোটারদের অনুরোধ জানাচ্ছি সবাই আগামী ৭ তারিখের নির্বাচনে অবশ্যই কেন্দ্রে যাবেন এবং শেখ হাসিনার নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। আগামী দিনে শেখ হাসিনাকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা করবেন।
মনির বলেন, আমার মনোনয়নপত্র দাখিল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যে উল্লাস ও ভালোবাসা দেখিয়েছেন এতে আপনাদের কাছে চিরঋণী। আমি সবসময় ভেবেছি রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ার মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই আমার পরিবার। তাইতো আমি মৃত্যুকে উপেক্ষ করে আমার সন্তান, স্ত্রী ও মাকে ঢাকাতে রেখে মহামারি করোনার সময়ও আপনাদের দ্বারে গিয়ে সাধ্যমত পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। নিজের শরীরে আওয়ামী লীগের রক্ত প্রবাহিত দাবি করে তিনি বলেন, এই রক্ত কখনো বেঈমানি শেখায়নি, এই রক্ত শিখিয়েছে এই জনপদের ত্যাগী, নির্যাতিত আওয়ামী লীগ পরিবারের অধিকার আদায়ে কথা বলার। রাজনীতি আমার নেশা ও পেশা।
এই রাজনীতি করেই আমার পথ চলতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শকে লালন করেই আগামী দিনের পথ চলা। কখনো নেত্রীর সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নৌকার বিপক্ষে কখনোই ছিলাম না। ভবিষ্যতেও থাকবো না। নৌকার আলোচিত প্রার্থী শাহজাহান ওমরকে সমর্থন দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি, কাউকে সমর্থন করে না।
এদিকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে কুষ্টিয়া-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. এস এম মুসতানজিদ বলেন, আমি দীর্ঘদিন কুষ্টিয়ায় বসবাস করি। ভেড়ামারা, মিরপুরসহ কুষ্টিয়ার সমস্ত মানুষের স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। শুধু স্বাস্থ্যসেবাই নয় সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলাম। এ কারণে কুষ্টিয়ার মানুষের ভালোবাসা ও সহযোগিতা পেয়েছি সবসময়। দ্বাদশ নির্বাচনে আমি কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। নির্বাচনী এলাকা মিরপুর ও ভেড়ামারাবাসীর কাছে গিয়েছিলাম, তাদের সমর্থন ও ভালোবাসা পেয়েছিলাম।
ইতোমধ্যে আপনার জানেন, দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক কর্মকাণ্ড ও নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে আমার সঙ্গে আমার ছোট ভাই হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আমার পরিবারের সদস্যরা একত্রে কাজ করেছে। সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৪ ডিসেম্বর বৈধতা এবং ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক পেয়েছিলাম। কিন্তু ১৯ ডিসেম্বর সকালে আমার ছোট ভাই হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ফেমাস হঠাৎ ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুর কারণে আমাদের পারিবারিক বিশাল বিপর্যস্ত হয়। সে আমার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিল। তার অনুপস্থিতি আমাদের সমস্ত কর্মকাণ্ডে বিপর্যস্ত হয়েছে। এমতাবস্থায় সার্বিক বিবেচনায় আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম।