আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির ভোট বর্জনের ডাক কেউ গ্রাহ্য করেনি। বিএনপিকেই জনগণ বর্জন করেছে। তারা (বিএনপি) নির্বাচন প্রতিহত করতে চেয়েছে। কিন্তু ব্যালটের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। রোববার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। নির্বাচন–পরবর্তী দলের প্রতিক্রিয়া জানাতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে অংশ না নিলেও ‘বিএনপি-জামায়াত’ সহিংসতা, নাশকতা ও পৈশাচিক অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত তারা সারা দেশে সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি অংশ না নিয়ে হত্যা, ভোটকেন্দ্রে আগুন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা, যানবাহনে আগুন ও অবরোধের মাধ্যমে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা করেছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েও তারা সহিংসতা করেছিল।
অপরাজনীতির কুচক্রে বিএনপি আটকে গেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির রাজনীতি হলো মানুষ হত্যার রাজনীতি। দেশের সম্পদ ধ্বংস ও রাষ্ট্রের ক্ষতি সাধনের রাজনীতি। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা যে তথ্য পেয়েছি, তাতে এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটের ব্যবধানে অধিকাংশ আসনে জয়লাভ করবে। আজ গণতন্ত্রের বিজয়ের দিন। আমরা বাংলাদেশের জনগণের কাছে সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ।’
আজকের নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, অনেক বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, সরকারপ্রধান হয়েও স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীন সংবিধানের বিধান অনুযায়ী কীভাবে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে আমরা কোনো সহিংসতা কখনোই চাইনি। তবে গণমাধ্যমে আমরা সর্বমোট ৩৭টি সহিংসতার খবর পেয়েছি, যা ৪২ হাজার কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের বিবেচনায় খুবই নগণ্য ও বিচ্ছিন্ন।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘নির্বাচন ভালো হয়েছে না খারাপ হয়েছে, তা পরিমাপ করার উপায় হচ্ছে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোটদানের পরিবেশ রয়েছে কি না, তা। আমরা নিজেরা দেখেছি এবং গণমাধ্যমগুলোতেও প্রচার হয়েছে যে নাগরিকেরা নিজেদের মতো করে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের কেউ বাধা দেয়নি।’
ভোটারের হার নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ৪০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি যেকোনো বিবেচনায় একটি ভালো মান। এটা কম নয়। অনেক দেশে এর চেয়েও কম হয়; ২৫-৩০ শতাংশ ভোট পড়ে।
সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পৃথিবীর একেক দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা একেক রকম। কোনো দেশেই শতভাগ নিখুঁত গণতন্ত্র বিরাজ করে না। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও তাদের দোসররা আমাদের রাজনীতিতে এখনো সক্রিয় থাকার ফলে এখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল। আমরা আশা করি, আমাদের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করার সময় সবাই এ কথা বিবেচনায় রাখবেন।’