❏ মন্ত্রণালয়ের আগাম দুঃখ প্রকাশ
গ্যাস সংকটে কলকারখানার পাশাপাশি এবার বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন কমে যাওয়ায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিতে পারে বলে শনিবার এক ফেইসবুকে বার্তায় সতর্ক করেছে মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, কারিগরি ত্রুটির কারণে মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। এতে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কিছুটা কমেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের কিছু কিছু এলাকাতে খুবই স্বল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতে পারে। সম্মানিত গ্রাহকদের অনাকাঙ্ক্ষিত অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলার গ্রামাঞ্চল থেকে বিদ্যুৎ সংকটের খবর আসছে। শনিবার দুপুরের পর থেকেই সারাদেশে প্রায় ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা গেছে। বেলা ২টার দিকে ৯ হাজার ৬৪০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছিল ৮ হাজার ৯২৬ মেগাওয়াট। এই সময় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন দুই আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক কমে ২৯০০ মেগাওয়াটে নেমে যায়।
শীত জেঁকে বসায় দেশে বিদ্যুৎ চাহিদাও কমে গেছে। দিনে রাতে বিদ্যুতের গড় চাহিদা ৭ হাজার মেগাওয়াট থেকে ১০ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে উঠানাম করছে। যদিও গ্রীষ্মে দেশের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। এই চাহিদার মধ্যে সম্প্রতি ৪ হাজার মেগাওয়াট থেকে সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছিল গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। তবে সংকটের কারণে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের উৎপাদন সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটে নেমে যাচ্ছে।
ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার বা এনএলডিসি ও সঞ্চালন কোম্পানি পিজিসিবির সাম্প্রতিক তথ্য থেকে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় চাহিদার বিপরীতে ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা যায়। ওই সময় চাহিদা ছিল ৯ হাজার ৩৭০ মেগাওয়াট আর উৎপাদন ছিল ৯ হাজার ৫৫ মেগাওয়াট। গত বুধবার মধ্য দুপুরেও প্রায় আড়াইশ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি নিয়ে চলেছে সরবরাহ কার্যক্রম।
নোয়াখালীর সোনাপুর উপশহরের বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা কখনও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ আমরা পাই না। শীতকালে কিছুদিন বিদ্যুৎ পাওয়ার শুরু করার পর সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
এখন তো বলতে গেলে গরমকালের মতো লোডশেডিং হচ্ছে। দিনে ৩/৪ বার চলে যাচ্ছে। একবার গেলে আধা ঘণ্টা-এক ঘণ্টার আগে ফিরছে না। গ্যাস ও বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে কলকারখানাতেও সংকটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস নিতে আসা যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যাচ্ছে।
গত ১৭ জানুয়ারির পর থেকে নতুন করে গ্যাসের সরবরাহ প্রতিবেদন দিচ্ছে না পেট্রোবাংলা। সেদিন ২৫৩৯ এমএমসিএফ গ্যাস সরবরাহের কথা জানান হয়েছিল। যদিও সংকট শুরুর আগে প্রায় ৪ হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে অন্তত ৩ হাজার এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছিল।