শীতের ভরা মৌসুমেও চড়া সবজির দাম বসন্তে এসে সামান্য নাগালের মধ্যে এসেছে। তবে বেড়ে চলেছে গরুর মাংসের দাম। এছাড়া বাজারে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন দেখা গেছে চিত্র।
এদিকে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, রমজানে নিত্যপণ্যের সংকট হবে না। এর মধ্যে ৪টি পণ্যের শুল্ক কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এই সপ্তাহেই আমদানিকারকদের সঙ্গে বসে তেলের দাম ঠিক করে দেয়া হবে। শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে নিজ বাসভবনে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত আমাদের পেঁয়াজ ও চিনি সরবরাহের জন্য রাজি হয়েছে। আমরা আশা করছি, ভারতসহ অন্যান্য পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ রাখতে পারবো। খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, চালের কোনও সংকট নেই৷ আমাদের প্রায় ১৭ লাখ টনের ওপরে চালের মজুত রয়েছে। কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, আমনের আবাদ ভালো হয়েছে।’
অন্যদিকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতের শিম, মুলা, শালগম প্রতি কেজি ও এবং ফুলকপি ও বাঁধাকপি এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার মধ্যে। যা গত সপ্তাহ থেকে প্রকারভেদে ১০-২০ টাকা কম। এর মধ্যে প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি আকারভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। লাউয়ের দামও প্রায় ২০ টাকা কমিয়ে ১০০ টাকার নিচে নেমেছে।
এছাড়া আলুর কেজি ৪০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, টমেটো গাজার ও শসার কেজি ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি ও করলা ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা আবু হোসেন বলেন, বাজারে সরবরাহ ভালো, যে কারণে সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। দীর্ঘদিন পরে সবজির দাম নিম্নমুখী।
বাজারে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। ভোটের আগে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকা পর্যন্ত নামলেও ভোটের পর তা ৭০০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। কিন্তু গত এক সপ্তাহে আরও দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা।
গরুর মাংসের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা বলেন, রোজা ও কোরবানি সামনে রেখে খামারিরা গরু বিক্রি কমিয়েছেন। সেজন্য বাজারে সরবরাহ কম, দাম বাড়ছে। গরুর মাংসের দাম বাড়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
আলাউদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, অনেকে দামের কারণে গরুর মাংস কেনা ছেড়ে দিয়েছিলেন। মাঝখানে দাম কমানোয় ক্রেতা বেড়েছিল। এখন আবার দাম বাড়া শুরু করেছে। রমজান মাসে গরুর মাংসের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে কে জানে।
বাজারে চড়া দামে আটকে আছে ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। প্রতি হালি বাদামি ডিম ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বড় বাজারে। আর পাড়া-মহল্লার দোকানে প্রতি হালি ডিমের দাম ৫০ টাকা, ডজন ১৫০ টাকা। এছাড়া ব্রয়লার মুরগির কেজি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শতক পেরিয়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম এখনো কমেনি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। একই সঙ্গে চড়া দামে আদা ও রসুন দুই পদই বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে। মুদি বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ১৫০ টাকা, ছোলা ১২০ টাকা এবং মসুর ডাল ১২০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা বছরের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।