বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫

সিলেট-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আরিফুল হক চৌধুরী

সিলেট-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আরিফুল হক চৌধুরী

অবশেষে সিলেট-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে তিনি নিজেই সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সিলেট-৪ আসনে আমাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। রাতেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, দলের চেয়ারপারসনের নির্দেশ আমি কখনোই অমান্য করিনি, করবো-ও না।  চেয়ারপারসন আমাদের জাতীয় মুরুব্বী। অতীতেও দলের প্রয়োজনে আমি বারবার নির্দেশ পালন করে আসছি। সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করার আদেশ মাথা পেতে মেনে নিয়েছি। তাই সিলেট-৪ আসনেই নির্বাচন করবো, সব আল্লাহর ইচ্ছা।

প্রসঙ্গত, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু গত সোমবার (৩ নভেম্বর) এই আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরকে দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে অনেকটা আশাহত হন আরিফ। এরপর আরিফকে তলব করে বিএনপির হাই কমান্ড। 


আরিফুল হক চৌধুরী ১৯৫৯ সালের ২৩ নভেম্বর সিলেটের কুমারপাড়ায় বিখ্যাত চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুহাম্মদ শফিকুল হক চৌধুরী এবং মাতা আমিনা বেগম। তিনি ছোটবেলা থেকেই সিলেট শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা গ্রহণ করেন। পারিবারিক প্রথা ও রাজনৈতিক পরিবেশ তার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি গড়ে ওঠে।


তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় স্থানীয় পর্যায়ে। তিনি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের একজন ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে উন্নয়ন কমিটির প্রধান হন। ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর তিনি যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। একই বছরের ১৯ জুন আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয় এবং ৯ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। ২০০৮ সালে চৌধুরী ও তার স্ত্রী শামা হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হলে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে চৌধুরী দুর্নীতির মামলায় খালাস পান।


২০১৩ সালের জুনে তিনি বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে পরাজিত করে সিলেট সিটির মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনে তিনি ৩৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। মেয়র হিসেবে তার প্রশাসনিক কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাইফুর রহমান শিশু পার্ক এবং অন্যান্য নাগরিক সুবিধা প্রকল্পের উন্নয়ন প্রচেষ্টা।

২০১৪ সালে তাকে শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং গ্রেফতার করা হয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিভিন্ন আদেশের মাধ্যমে তিনি আবার দায়িত্বে ফিরে আসেন।


২০১৮ সালে চৌধুরী পুনর্নির্বাচনে জয়লাভ করেন, যেখানে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে ৬,১৯৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। নির্বাচনের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান।


সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ