বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন!

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন!

❏ বাংলাদেশের নির্বাচন ও গণতন্ত্র

‘অনেক টেনশন তৈরি হয়েছিলো। তবে এসব সরিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সামনে তাকাতে চায়, পেছনে নয়’ – যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফরে কয়েক দফায় এমন মন্তব্য আসার পর প্রশ্ন উঠেছে যে নির্বাচন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের আগে যে শক্ত অবস্থান নিয়েছিলো সেই নীতি থেকে সরে দাঁড়ালো কি না। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন যুক্তরাষ্ট্র আসলে তার ‘মূল্যবোধ ভিত্তিক’ নীতিগত অবস্থান অর্থাৎ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার কিংবা মত প্রকাশের স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলোতে আগের নীতিতে অটল থেকেই বাংলাদেশ সরকারের সাথে সংযুক্ত থেকে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। সেটিই মি. লু’র বক্তব্যে উঠে এসেছে বলে মনে করেন তারা।

অন্যদিকে, ঢাকায় লু’র বক্তব্যের পর সরকারি দল আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি আর বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর মধ্যে অস্বস্তির আবহ তৈরি হয়েছে। যদিও দল দুটির নেতারা প্রকাশ্যে স্বস্তি-অস্বস্তির বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন ‘কিছু বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি ছিল যা সিভিল সোসাইটির লোকজন তৈরি করেছিলো। এখন আর সেটি নেই। যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পেরেছে জনগণ এ সরকারের সঙ্গেই আছে।’

আর বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, বাংলাদেশের বিষয়ে বাইরের কোনো শক্তির কিছু করার নেই, বরং এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল ও জনগণের বিষয়। তবে সাম্প্রতিক মানবাধিকার রিপোর্টই বলে দেয় যে যুক্তরাষ্ট্র তার নীতিগত অবস্থান থেকে সরেনি। তবে গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে এ নিয়ে আর খুব একটা উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি। এমনকি ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকেও প্রকাশ্যে আসতে দেখা যায়নি। এরমধ্যেই ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলকে মনোনীত করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

নির্বাচন, টানাপড়েন ও ভারতের অবস্থান: ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এলিট ফোর্স র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসলে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে টানাপড়েন তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বলেছিলেন যে ‘যুক্তরাষ্ট্র হয়তো তাকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না’। এরপর কখনো ভিসা নীতি, কখনো বা শক্ত ভাষায় মিত্রদের চাপ, পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক না পাঠানোর ঘোষণা- এমন অনেক প্রক্রিয়ায় সরকারের ওপর নজিরবিহীন চাপ তৈরি করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র, যা নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছিলো।

বিশেষ করে র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে পড়ার মধ্যে ২০২৩ সালের পঁচিশে মে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন সামনে রেখে ভিসা নীতি ঘোষণা করলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ‘দৃশ্যত নজিরবিহীন চাপে পড়ে’ যায় বলে অনেকের কাছে মনে হচ্ছিলো। ভিসা নীতি ঘোষণা করে দেশটি বলেছিলো বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কেউ অযাচিত হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তার করলে তারা ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবেন। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে এটি কার্যকর করা হয়েছে বলেও ঘোষণা এসেছিলো। তবে কাদের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে সেটি কখনো প্রকাশ করা হয়নি। বাংলাদেশের নির্বাচনের আগেই এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার আলোচনার খবর আসে। গত বছর নভেম্বরে ভারতের বিদেশ সচিব ভিনয় কোয়াত্রা জানান ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের ‘টু-প্লাস-টু’ বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। মূলত এরপরই নির্বাচন নিয়ে দৃশ্যত শক্ত অবস্থান থেকে কিছুটা নমনীয়তা প্রদর্শন শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ঢাকায় বিএনপি নেতারাও নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থানের সমালোচনা করে বক্তব্য দিতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে, নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন দলগুলো। নির্বাচনটি সুষ্ঠু হয়নি বলেই মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। যদিও নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে কোন ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে গণতন্ত্র, নির্বাচন, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার কিংবা মত প্রকাশের মতো ইস্যুগুলো নিয়ে একটি মূল্যবোধ ভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতির কথা চিন্তা করেছিলো। কিন্তু সে পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হয়নি। আমার ধারণা ভারতের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের অক্টোবর পরবর্তী অবস্থানে প্রভাব বিস্তার করেছে। এটা অনস্বীকার্য যে এমন সময়ে তাদের অবস্থানের এই পরিবর্তন দেখতে পাই যখন তার আগেই ওই বৈঠক (ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রীদের 'টু প্লাস টু') হয়েছে। তার মতে এ অঞ্চল ভারতের অবস্থানকে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্ব দেয় এবং এটাই বড় উপাদান হিসেবে কাজ করেছে। অর্থাৎ ভারতের অবস্থান হয়তো তাদের প্রভাবিত করেছে।

ডোনাল্ড লু কী বলেছেন?: ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে ডোনাল্ড লু’র আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় বলা হয়েছে, “সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আমাদের আলোচনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গড়ে তোলা, কর্মশক্তি বৃদ্ধি, নিরাপত্তা সহযোগিতার উন্নতি, জলবায়ু সংকট মোকাবেলা এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমাদের মূল্যবোধকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের যৌথ অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করেছে”। পাশাপাশি ওই বৈঠকের পর ডোনাল্ড লু সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, “আমরা জানি, গত বছর বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অনেক টেনশন ছিল। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন (বাংলাদেশে) অনুষ্ঠানে যথেষ্ট চেষ্টা করেছিলাম। এতে কিছু টেনশন তৈরি হয়েছিল। আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা স্বাভাবিক। আমরা সামনে তাকাতে চাই, পেছনে নয়। আমরা সম্পর্ক জোরদারের উপায় খুঁজে বের করতে চাই। আমাদের সম্পর্কের পথে অনেকগুলো কঠিন বিষয় রয়েছে, র‍্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার ও ব্যবসার পরিবেশের উন্নয়ন। কিন্তু কঠিন বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার জন্য ইতিবাচক সহযোগিতার ওপর ভর করে এগিয়ে যেতে চাই।

নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকায় এসে তার এমন বক্তব্যের পরই প্রশ্ন উঠে- তাহলে কী নির্বাচন, গণতন্ত্রের মতো বিষয়গুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে দাঁড়ালো বা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করলো?

অবস্থান পরিবর্তন?: অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলছেন, ডোনাল্ড লু যা বলেছেন তাতে তার কাছে মনে হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র নীতিগত অবস্থা বহাল রেখেও বাংলাদেশের সাথে এক ধরনের এনগেজমেন্ট চাইছে। তারা সরকারের সাথে কাজ করতে চায়। কিন্তু তারা তাদের আপত্তির কথাগুলোও বলবে। তারা হয়তো ওভাবে চাপ দিবে না কিন্তু গণতন্ত্র বা মানবাধিকার থেকে সরে যাবে বলে মনে হয় না। যুক্তরাষ্ট্র বুঝিয়েছে যে তারা সরকারের সাথে কাজ করতে অনাগ্রহী নয়। আবার তারা এটিও বলেছে যে নির্বাচন যেটি হয়েছে সেটিকে তারা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন মনে করে না। কিন্তু দেশে সরকার আছে এবং সেই সরকারের সাথে তারা যুক্ত থাকতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অস্বস্তি আছে এটা তারা বলেছে কিন্তু সেটিকে সাথে নিয়েই তারা সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার কথা বলছে। তার মতে, গণতন্ত্র কিংবা মানবাধিকারের মতো ইস্যুগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে দাঁড়াবে না। তাদের সাম্প্রতিক মানবাধিকার রিপোর্টেই সেটি পরিষ্কার হয়েছে। দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সাথে কাজের সুযোগ আছে। একই সাথে দুই দেশের সম্পর্কে অনেক জায়গা আছে। সে ব্যাখ্যা তারা দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নমনীয়তার কারণ কী?: অনেকেই মনে করেন মূলত বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতের শক্ত অবস্থানের কারণেই শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারকে শেষ পর্যন্ত চাপে রাখতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। এ কারণে অনেকের মধ্যে কৌতূহলও আছে যে কেন ‘ভারতের পরামর্শ’মেনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে উচ্চবাচ্য থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র।

রীয়াজ বলেন, ভিসা নীতি ছাড়া ওই অর্থে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আর কোনো ‘অ্যাক্ট’ বা কার্যকর পদক্ষেপই নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। ভিসা নীতির বাইরে কার্যকর কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে প্রশ্ন কিন্তু আছে। ভিসা নীতি দিয়েই একটা দেশে অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত হয়ে হবে এটা মনে করার তো কোনো কারণ নেই। আর এর আগে র‍্যাবের ইস্যুটা একেবারেই বাহিনী কেন্দ্রিক”। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত ভূমিকার ক্ষেত্রে ভূ রাজনৈতিক ইস্যু প্রাধান্য পেয়েছে এবং এই ভূ-রাজনৈতিক কারণেই তারা চাইছে যে বাংলাদেশের সাথে এনগেজমেন্টের বা এক সাথে কাজ করার জায়গাটা যেন থাকে। না হলে সরকারের ওপর চাপ তৈরির সুযোগ থাকবে না। এখানে ইন্দো প্যাসিফিক ছাড়াও মিয়ানমার ইস্যুও আছে। মিয়ানমারের ভেতরের যে অবস্থা সে কারণেও বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক জোরদার করা দরকার যুক্তরাষ্ট্রের। অর্থাৎ মিয়ানমারের পরিস্থিতিও বাংলাদেশে নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত যে ভূমিকা তাতে হয়তো অবদান রেখেছে। এছাড়া এ অঞ্চলে ভারতের অবস্থানকে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্ব দেয়। এটা বড় উপাদান হিসেবে কাজ করেছে। ভারতের অবস্থান তাদের প্রভাবিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত আঞ্চলিক রাজনৈতিক শক্তির ভারসাম্যকে বিবেচনায় নিয়েছে, অর্থাৎ রিয়েলিস্ট পলিটিকস বা মাঠের বাস্তবতাকে মেনে নিয়েছে। আর সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির বলেছেন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অনেক জায়গা আছে সেটিই যুক্তরাষ্ট্র বোঝাতে চাইছে বলে মনে হয়েছে তার কাছে। তাদের বক্তব্য পাল্টায়নি। তবে অস্বস্তিটা স্বীকার করেই তারা দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ককে এখন এগিয়ে নিতে চাওয়ার কথা বলছে।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে স্বস্তি-অস্বস্তি: নির্বাচনের আগে সক্রিয় থাকায় ডোনাল্ড লু’র ওপর ক্ষোভ ছিল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে। অন্যদিক বিএনপিতে ছিল ঠিক তার উল্টো প্রতিক্রিয়া। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু’র বক্তব্যে দল দুটিরও অবস্থান পাল্টে গেছে। যদিও বিএনপি নেতারা বিষয়টি নিয়ে খুব কৌশল অবলম্বন করেই কথা বলছেন। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিদেশিদের কিছু করার নেই বরং এটি তার দল রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমেই করবে। যুক্তরাষ্ট্র তার নিজের স্বার্থে কাজ করে সব জায়গায়। তবে এখানে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে তারা কিছু বলেনি। যার প্রমাণ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে তাদের সাম্প্রতিক রিপোর্ট। তাই এখানে স্বস্তি-অস্বস্তির বিষয় নেই। দু দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখতে হয়। সে কারণে তারা সরকারের সাথে কাজ করে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মত প্রকাশের মতো বিষয়ে তারা সোচ্চার। তবে রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের কাজটি আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে করবো।

আর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলছেন কিছু বিষয়ে ‘অস্বস্তি’ থাকলেও এখন দু দেশের সম্পর্ক আরও সামনে এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমরা জানি যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী দেশ এবং বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতিতে তারা নেতৃত্বে দেয়। সব জায়গায় তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ আছে। আগে নির্বাচন বা গণতন্ত্র বা বৈধতা নিয়ে তাদের প্রশ্ন ছিল। মানবাধিকার নিয়েও বক্তব্য ছিল। কথা বলার স্বাধীনতা নিয়ে পর্যবেক্ষণ ছিল। এখন তারা দেখছে জনগণ সরকারের সাথেই আছে। তাদের বর্তমান অবস্থান বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে। তার মতে ঢাকায় ডোনাল্ড লু যুক্তরাষ্ট্র সরকারের যে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন তাদের যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সাথেও বাংলাদেশে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। খবর বিবিসি বাংলার।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন