শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

তফসিল ঘোষণায় আপত্তি নেই, যথাসময়ে নির্বাচন হোক : বিএনপি

তফসিল ঘোষণায় আপত্তি নেই, যথাসময়ে নির্বাচন হোক : বিএনপি

নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, খোদা না করুন– অনিবার্য কোনো পরিস্থিতি ছাড়া আমরা এই (নির্বাচন) প্রক্রিয়ার বাইরে যেতে চাই না। আমরা চাই যথাসময়ে নির্বাচন হোক। তফসিল ঘোষণা করার যে সময় নির্ধারণ করা আছে, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধি দল এ কথা বলেন। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন– চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাত্রার পরই আসন্ন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। 

দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নেত্রী খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে এবং সম্ভবত কাল ভোরেই তিনি দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন। এর পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় থাকা এবং যথাসময়ে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে দলটি।

বৈঠকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য এবং কোনো ভোটার যেন তার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে বিএনপি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে এবার সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য দুটি ব্যালট থাকায় ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কায় পোলিং বুথে ভোটারের সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, বর্তমানে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটের সময়কে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত করা যায় কিনা, তা বিবেচনা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রতি বুথে ভোটারের সংখ্যা কমানো এবং মার্কিং প্লেসের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে ভোট দেওয়ার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন হয়। এ ছাড়া প্রয়োজনে ব্যালট বাক্সের সংখ্যাও বাড়ানোর কথা বলেছে দলটি।

বিএনপির উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন এবং আগামী রোববারের মিটিংয়ে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। কমিশনও চাইছে সব ভোটার যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে।

তিনি জানান, বৈঠকে ভোটার আইডি তৈরির ক্ষেত্রে ন্যাশনাল আইডি কার্ডের বিকল্প হিসেবে পাসপোর্টকে ভ্যালিড ডকুমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করার জন্য জোরালো অনুরোধ জানানো হয়েছে।

যুক্তি হিসেবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, অনেক নাগরিকের, বিশেষ করে বিদেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের ন্যাশনাল আইডি নেই, কিন্তু তাদের সবারই পাসপোর্ট আছে। ন্যাশনাল আইডি ও পাসপোর্ট উভয়ই সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত ভ্যালিড ডকুমেন্ট। প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোট দিতে চাইলেও ন্যাশনাল আইডি না থাকায় পারছেন না। এ জন্য পোস্টাল ব্যালটের রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রেও পাসপোর্টকে বিবেচনা করার অনুরোধ করা হয়েছে।

বিএনপির পক্ষ থেকে ব্যালট পেপার ছাপানোর ক্ষেত্রে কোনো বেসরকারি (প্রাইভেট) প্রেস ব্যবহার না করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অতীতে সরকারি প্রিন্টিং প্রেসেই ব্যালট ছাপা হয়েছে এবং দলটির আশঙ্কা, প্রাইভেট প্রেসে ছাপানো হলে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করেছে যে কোনো প্রাইভেট প্রেসে ব্যালট পেপার ছাপানো হবে না।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও দেশের বাইরে চিকিৎসার বিষয়ে দলটির অবস্থান জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, তার সুচিকিৎসার জন্য চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তারা আছেন এবং যথাসময়ে নির্বাচন হোক– এই দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

অন্যদিকে, তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিক এবং ভোটার তালিকায় নাম না থাকার বিষয়টি বড় কোনো সংকট নয়, কারণ কমিশন চাইলে এখনও নাম অন্তর্ভুক্তির সুযোগ দিতে পারে বলে জানান তিনি

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ