সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫

সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ বাড়ছে

সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ বাড়ছে

ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ আবার কিছুটা বেড়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার নিট ২ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে। এর আগের অর্থবছর শেষে সঞ্চয়পত্রে সরকারের নিট ঋণ ঋণাত্মক ছিল ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। গত তিন অর্থবছর ধরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির তুলনায় বেশি ভাঙানো হওয়ায় নিট বিক্রি ঋণাত্মক ছিল। তবে চলতি অর্থবছরের শুরুতে সে ধারা কিছুটা পালটেছে। জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবর শেষে সঞ্চয়পত্রে সরকারের মোট ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা।


বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎস থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গত অর্থবছরের মূল বাজেটে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে কমিয়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা করা হয়। তবে বিক্রির তুলনায় বেশি ভাঙানোর কারণে শেষ পর্যন্ত নিট ঋণ ঋণাত্মক ছিল। সঞ্চয়পত্রের মোট বিক্রি থেকে মেয়াদপূর্তিতে ফেরত দেওয়া অর্থ এবং মেয়াদের আগে ভাঙানো অংশ বাদ দিয়ে নিট বিক্রির হিসাব করা হয়।



দুই পত্রিকা ও ছায়ানট-উদীচীতে হামলায় শনাক্ত ৩১, গ্রেপ্তার ৯

চলতি অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। গত ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৪৫ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং সংশোধিত বাজেটে ৯৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয় ৭২ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা।


সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংক ঋণের তুলনায় উচ্চ সুদসহ নানা কারণে এক সময় বাজেটে নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি হতো। সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ কমাতে সে সময় কয়েক দফায় সুদহার কমানো হয়। যদিও ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহার অনেক বেড়েছিল, সঞ্চয়পত্রের সুদ কমানো হয়। ফলে গত তিন অর্থবছর ধরে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমতে থাকে। বিপরীতে ট্রেজারি বিল ও বন্ডে ব্যক্তি বিনিয়োগ কয়েক গুণ বেড়েছে।


তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহার আবার কমতির দিকে। এ কারণে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।


জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি ৬ হাজার ৬৩ কোটি টাকা কমে সরকারের ঋণস্থিতি নেমে আসে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকায়। এরপর চলতি অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত তা আবার বেড়ে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণস্থিতি কমে যায় ২১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কমে ৩ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ১৯ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪১ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা ঋণ নেয়।

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ