ফরিদপুর জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে বহিরাগতদের হামলার জেরে জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমসের কনসার্ট পণ্ড হওয়ার ঘটনায় পুলিশের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ ও ‘গাফিলতি’কে দায়ী করেছে আয়োজক কমিটি। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় পুরো আয়োজন ভেস্তে যায়, যা স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম হতাশা তৈরি করেছে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় দেওয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা জানান ফরিদপুর জিলা স্কুলের গৌরবময় ১৮৫ বছর উদযাপন ও পুনর্মিলনী কমিটির প্রচার ও মিডিয়া উপকমিটির আহ্বায়ক রাজীব খান।
বিবৃতিতে রাজীব খান বলেন, ‘ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর উদযাপন ও পুনর্মিলনীর শেষ দিনে বহিরাগতদের হামলার কারণে জেমসের (নগরবাউল) বহুল প্রত্যাশিত কনসার্টটি পণ্ড হয়ে যায়। শুরু থেকে অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবেই চলছিল। তবে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে বহিরাগত কয়েকজন জোরপূর্বক অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করে। এতে বাধা দেওয়া হলে তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে অনুষ্ঠানস্থল দখলের চেষ্টা চালায়।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা আগেই জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। জেলা পুলিশ আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিলে এ ধরনের অনভিপ্রেত পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব ছিল। স্কুলের ফটকে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া বহিরাগতদের সরিয়ে দেওয়া হলে পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ রূপ নিত না।’
রাজীব খান বলেন, ‘এই হামলার ঘটনায় আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
অন্যদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নাকচ করেছেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ যথাযথভাবে কাজ করেছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো উদাসীনতা ছিল না। আমরা আমাদের সাধ্যমতো দায়িত্ব পালন করেছি।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। দুই দিনব্যাপী এ আয়োজনের শেষ দিন শুক্রবার রাতে সমাপনী আকর্ষণ হিসেবে জেমসের কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বহিরাগতদের ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে আয়োজক কমিটির আহ্বায়কসহ অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে রাত ১০টার দিকে অনুষ্ঠান বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।
হামলার সময় জেমস শহরের অন্য প্রান্তে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের রেস্ট হাউসে অবস্থান করছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে সেখান থেকেই তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
বিনোদন | বাংলাবাজার পত্রিকা.কম
























