শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে বিএনপির ক্ষোভ, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দাবি

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে বিএনপির ক্ষোভ, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দাবি

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বক্তব্যে ‘শব্দ চয়ন রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম করেছে’ বলে মনে করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। 

শুক্রবার (৬ জুন) মধ্যরাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ মতামত ব্যক্ত করা হয় বলে জানানো হয়েছে। বৈঠকে আবারও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ দিন অপরাহ্ণে প্রধান উপদেষ্টার জাতীর উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণ পর্যালোচনা করে সর্বসম্মতভাবে এই অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে যে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে তার দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গকে অতিক্রম করে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পরিণত হয়েছে। এই দীর্ঘ ভাষণে তিনি বন্দর, করিডোর ইত্যাদি এমন সব বিষয়ে অবতারণা করেছেন যা তারই ভাষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিটি ‘ম্যান্ডেটের’ মধ্যে পড়ে না। 

সভায় প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে সময়সীমা প্রস্তাব করেছেন তা পর্যালোচনা করে সভা মনে করে যে, এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে একদিকে আবহাওয়ার সংকট এবং অন্যদিকে রমজানের মধ্যে নির্বাচনি প্রচারণা ও কার্যক্রম এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে যা নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। অধিকন্তু কেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়, এমন কোনও সুনির্দিষ্ট কারণ তার ভাষণে উল্লেখ করা হয়নি।

বিএনপি বলেছে, প্রায় দেড় যুগ ধরে মৌলিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত এ দেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য গুম, খুন, জেল-জুলুম, আহত ও নির্যাতিত হয়েও অব্যাহত লড়াই চালিয়ে গেছে। 

স্থায়ী কমিটি মনে করে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে তার বিজয় অর্জিত হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানে অহেতুক বিলম্বে জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে বিধায়, এই সভা রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করছে।

নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কথা বললেও একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত অগ্রাহ্য করে নিজেদের নিরপেক্ষতাকেই যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, তাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে দেশের জনগণ সঙ্গতভাবেই শঙ্কিত হতে পারে বলে মনে করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস নির্বাচনের একটি সময়ে ঘোষণা করেন। সেখানে তিনি বলেন, ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনও একটি দিনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে আপনাদের কাছে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রদান করবে। 


সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ