বাংলাদেশে আবারও কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি করোনা শনাক্তের হার এপ্রিল মাসের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনার নতুন ধরন Omicron JN.1, XFG ও XFC ছড়াতে শুরু করায় এই বৃদ্ধি ঘটছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে আবারও বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সরকারি টিকাদান কর্মসূচির আওতায় বর্তমানে প্রায় ৩১ লাখ ফাইজার টিকা মজুত রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ লাখ টিকার মেয়াদ আগামী ৬ আগস্টের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। ফলে সময়মতো কার্যকর টিকাদান কর্মসূচি না চালু হলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক টিকা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
কারা বুস্টার ডোজ নেবেন?
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, যাদের সর্বশেষ টিকা নেয়ার পর ছয় মাস বা তার বেশি সময় পার হয়েছে, তাদের পুনরায় বুস্টার ডোজ নেয়া প্রয়োজন। বিশেষভাবে যাদের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি, তারা হলেন:
৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী নাগরিক,
গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারী,
দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় আক্রান্ত (যেমন: ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, হৃদরোগ, ক্যানসার),
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল (ইমিউনো-কমপ্রোমাইজড) ব্যক্তিরা,
সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীরা।
টেস্টিং কিট সংকট এবং সতর্কতা: ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল করোনা পরীক্ষার কিট সংকটে ভুগছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে।সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিলে ঘরে থেকেই আইসোলেশন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে টিকা নেওয়ার পাশাপাশি নিম্নোক্ত সতর্কতাগুলো এখনো সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ: নিয়মিত মাস্ক পরা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলা।
যাদের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪ শতাংশের নিচে নেমে যায়, তাদের দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। যথাযথ সচেতনতা, সময়মতো টিকা গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।