সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে ইসরায়েলের হামলা বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ১১৬ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য দ্রুত ইসিকে জানাতে বললেন সালাহউদ্দিন বাংলাবাজার পত্রিকা.কম নিজ দলের নারী কর্মীকে কুপ্রস্তাব এনসিপি নেতার, অডিও ফাঁস! বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ধেয়ে আসছে শক্তিশালী বৃষ্টিবলয় ‘রিমঝিম’, তিন বিভাগে বন্যার শঙ্কা বাংলাবাজার পত্রিকা.কম হাসিনা-কামালকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে এখনও গণমাধ্যম পুরোপুরি মুক্ত নয়’ বাংলাবাজার পত্রিকা.কম লন্ডন থেকে দেশে ফিরে যে বার্তা দিলেন আমীর খসরু বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ইডেন কলেজের পুকুরে পানিতে ডুবে শিক্ষার্থীর মৃত্যু বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ঈদযাত্রার ১৫ দিনে সড়কে নিহত ৩৯০

কথাবার্তায় সংযত থাকে প্রকৃত মুমিন

প্রতীকি ছবি

প্রকৃত মুমিন কখনও তার কথার মাধ্যমে অন্যকে কষ্ট দেয় না। বাকশক্তি আল্লাহর দেয়া অন্যতম বড় নেয়ামত। এই নেয়ামতের কদর করতে হবে। কথা বলতে হবে জেনে-বুঝে ও হিসেব করে।

কারণ, মানুষের প্রতিটি কাজ-কর্ম ও কথা লিপিবদ্ধ করা হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা তা রেকর্ড করে নেয়। তাতে কোনো গুনাহ থাকুক বা না থাকুক।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার সঙ্গেই রয়েছে।’ (সুরা কাফ: ১৮)

অর্থহীন কথা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনরা সফলকাম হয়েছে, যারা তাদের নামাজে বিনয়ী, যারা অর্থহীন কথা-কাজ থেকে বিরত থাকে।’ (সুরা মুমিনুন: ১-৩)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে।’(সহিহ মুসলিম: ৪৭)

আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রকৃত মুসলিম সে, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে।’ (সহিহ বুখারি: ৬৪৮৪) তবে, কল্যাণকর কথা বলতে মানা নেই, বরং উত্তম কথার পুরস্কার অনেক বড়।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতাআলা ইরশাদ করেন, ‘তাদের বেশিরভাগ গোপন পরামর্শে কোনো কল্যাণ নেই। তবে কল্যাণ আছে যে নির্দেশ দেয় দান-খয়রাত, সৎকাজ ও মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের; আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আকাঙ্ক্ষায় কেউ তা করলে আল্লাহ তাকে অবশ্যই মহাপুরস্কার দেবেন।’ (সুরা নিসা: ১১৪)

উত্তম ও সুন্দর কথাকে সদকার সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে হাদিসে। আবু হুরায়রা (র.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেন, ‘সূর্য উদিত হওয়া প্রতিটি দিনেই মানুষের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপর সদকা দেয়া আবশ্যক। কাউকে বাহনে উঠতে কিংবা কোনো সামগ্রী বাহনে তুলে দিতে সাহায্য করা সদকাস্বরূপ। সুন্দর কথা বলা সদকাস্বরূপ। নামাজে যাওয়ার প্রতিটি পদক্ষেপ সদকাস্বরূপ। পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা সদকাস্বরূপ।’ (সহিহ মুসলিম: ১০০৯) এমনকি সুন্দর কথা ও উত্তম ব্যবহার মানুষকে জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

আদি ইবনে হাতিম (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, জাহান্নামের আগুন থেকে আত্মরক্ষা করো, যদিও তা খণ্ডিত খেজুরের বিনিময়েও হয়। কেউ যদি তা করতেও সক্ষম না হয়, সে যেন অন্তত ভালো ও সুন্দর ব্যবহার দিয়ে হলেও নিজেকে জাহান্নাম থেকে বাঁচায়। (সহিহ বুখারি: ৬৫৪০)।

তাই কথা বললে কল্যাণকর কথা বলার চেষ্টা করতে হবে, নতুবা চুপ থাকতে হবে। শায়খ বকর ইবনে আবদুল্লাহ আল-মুজানি (রহ.)-কে চুপ থাকা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল— আপনি এত দীর্ঘ সময় চুপ থাকেন কেন? তিনি জবাব দেন, আমার জিহ্বা হিংস্র একটা জীবের মতো, যদি আমি ছেড়ে দিই, এটি আমাকে খেয়ে ফেলবে। (বাহজাতুল মাজালিস: ০১/১১)।

সামান্য একটু কষ্টদায়ক কথার পরিমাণ ও উত্তম কথার বিনিময় কী হতে পারে, তা নিচের হাদিস থেকেই বোঝা যায়। আবু আবদুর রহমান বিলাল ইবনে হারেস মুজানি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন— ‘মানুষ আল্লাহ তাআলার সন্তোষমূলক এমন কথা বলে, আর সে কল্পনাও করে না যে, তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, আল্লহ তার দরুন তার সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত তার জন্য সন্তুষ্টি লিখে দেন।

পক্ষান্তরে মানুষ আল্লাহতাআলার অসন্তোষমূলক এমন কথা বলে, আর সে কল্পনাও করে না যে, তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, আল্লাহ তার দরুন তার সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত তার জন্য অসন্তুষ্টি লিখে দেন। (মালিক: ২৬৫; আহমদ: ১৫৮৫২; তিরমিজি: ২৩১৯; ইবনে মাজাহ: ৩৯৬৯; ইবনে হিব্বান: ২৮০; সিলসিলাতুস সহিহাহ: ৮৮৮)।

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ