সম্প্রতি ভোক্তাদের পছন্দের শীর্ষে থাকা আলু আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার পাশাপাশি ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক তুলে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। শুল্ক তুলে নেয়ার দুই দিন পার হলেও বাজারে আলুর দামে কোনো হেরফের হয়নি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুল্ক তুলে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দাম কমবে না। এর জন্য সময় লাগবে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শান্তিনগর, তুরাগ এলাকার নতুনবাজার ও কাওরান বাজারসহ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
যদিও সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৬০ টাকায়। গত এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি আলুতে দাম বেড়েছে ৩৩ শতাংশের বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে আলুর বার্ষিক চাহিদা ৮০ লাখ টন। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে আলু উত্পাদন হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ টনের কাছাকাছি। অর্থাৎ, গত অর্থবছরে দেশে চাহিদার চেয়ে ৩০ লাখ টন বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। এসব আলু উৎপাদনে কেজিপ্রতি খরচ পড়ে মাত্র ১০ টাকা ৫১ পয়সা। অথচ রাজধানীর বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, দেশে যে পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়, তা চাহিদার তুলনায় বেশি। এছাড়া উৎপাদন খরচও অনেক কম। আলুর বাজারে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। তারা অধিক মুনাফা করায় খুচরা বাজারে আলুর দাম কমছে না। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষকে।
তারা আরও বলেছেন, উৎপাদনের পর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আলু নষ্ট হলেও যে পরিমাণ আলু উদ্বৃত্ত থাকছে তা দিয়ে সহজেই চাহিদা মেটানো সম্ভব। সেই সঙ্গে দামও এত বেশি হওয়ার কথা নয়। কাজেই আলুর বাজারে একটা শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে। তারাই বাজারে আলুর এ উচ্চমূল্য ধরে রেখেছে।
এদিকে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে অন্যান্য সবজির দাম কিছুটা কমেছে। গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে বরবটি ৮০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। যা সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কম। অন্যান্য সবজির মধ্যে পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকড়ল, করল্লা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।