যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হেনেছে দেশটির ইতিহাসে অন্যতম শক্তিশালী হারিকেন ‘হেলেন’। এতে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় রাজ্য ফ্লোরিডা ও জর্জিয়া ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৬ জন। ৪০ লাখের বেশি ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ১০ মিনিটে ঘূর্ণিঝড়টি ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড অঞ্চলে আঘাত হানে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪ ক্যাটাগরির এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি দেশটির উপকূলীয় এলাকায় বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করেছে। এতে করে ফ্লোরিডা উপকূলের টাম্পা, ন্যাপলস ও সেন্ট পিটার্সবার্গ এলাকায় বহু নৌযান উল্টে আছে। রাস্তার ওপর অনেক গাছ উপড়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় যানবাহন পানিতে আটকা রয়েছে এবং কিছু জায়গায় রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।
বিগ বেন্ডে আছড়ে পড়ার পর জর্জিয়া, টেনেসি, উত্তর ক্যারোলাইনা এবং দক্ষিণ ক্যারোলাইনার দিকে এগোতে হতে থাকে হেলেন। এ সময় কমতে থাকে ঝড়ের গতিবেগও। শুক্রবার বিকেলের দিকে সাধারণ মৌসুমি ঝড়ে পরিণত হয় হেলেন, ঘণ্টায় ৫৫ থেকে ৩৫ কিলোমিটারে নেমে আসে বাতাসের গতিবেগ।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (ফেমা) তথ্য অনুযায়ী, বিগ বেন্ডে আছড়ে পরার পরবর্তী ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজের শক্তি ধরে রাখতে পেরেছিল হেলেন। পরে ধীরে ধীরে এটি সাধারণ মৌসুমি ঝড়ে পরিণত হয়।
মার্কিন ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, হারিকেন হেলেন ২২৫ কিমি বেগে ফ্লোরিডা উপকূলে আছড়ে পড়ে। শুক্রবার প্রথম প্রহরে পাশের রাজ্য জর্জিয়ার দিকে ধেয়ে যাওয়ার সময় এটি দুর্বল হয়ে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ে পরিণত হয়। এ ছাড়া বিকেলের দিকে ঝড়টি একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় নিম্নচাপে পরিণত হয়। তখন এর বাতাসের গতি ছিল ৫৫ কিলোমিটার। তারপর টেনেসি ও কেন্টাকির ওপর দিয়ে এটি ধীরে বয়ে যায়।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, হারিকেন হেলেনের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতে দক্ষিণ অ্যাপালাচিয়ানে বিপর্যয়কর বন্যা তৈরি হয়েছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন কেন্দ্র জানিয়েছিল, স্থানীয় সময় এটি শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ফ্লোরিডায় আঘাত হানতে পারে। গতকাল শুক্রবার প্রায় ২০ লাখের বেশি ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল।