মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

উদ্বেগ বাড়িয়েছে পলাতক দুই জঙ্গি

আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি

আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যদিও তারা পালিয়ে যাওয়ার পর পরই দাবি করা হয়েছিল তারা নজরদারিতে রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে সারা দেশে একাধিক অভিযান চালালেও তেমন সফলতা পায়নি পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। যদিও গোয়েন্দারা পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের অপরাধের ধরন পর্যালোচনা করছেন বলে জানা গেছে।

গত ২০ নভেম্বর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ২ সদস্যকে ঢাকা সিএমএম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের সঙ্গীরা। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ।

এর পর পরই পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি সদস্যকে ধরিয়ে দিলে প্রত্যেকের জন্য ১০ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ। এর আগে দুই জঙ্গি পালানোর সহযোগিতায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ঘটনার দেড় মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হওয়ায় প্রশাসনে উদ্বেগ বাড়ছে। যদিও জঙ্গিদের ধরতে নানা ধরনের ফাঁদ পেতেছেন গোয়েন্দারা। কারাগারে কড়াকড়ি আরোপ না করে যেসব জঙ্গি মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন তাদের আরো সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এসব ফোনের মাধ্যমে কাদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করছেন, সেই নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এদিকে জঙ্গিদের ডান্ডাবেড়ি পরাতে কারাগার কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে পুলিশ। 

কাউন্টার টেররিজমের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পালিয়ে যাওয়া জঙ্গি গ্রুপ শীতলক্ষ্যা পাড়ি দিয়ে নারায়ণগঞ্জ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্তের দিকে গেছে। তবে তারা এখনো সীমান্ত পাড়ি দিতে পারেনি বলেই মনে করছেন তারা। পুরো সীমান্ত সিল করে দেয়া হয়েছে। ফলে খুব বেশি দিন তারা পালিয়ে থাকতে পারবে না। ওই এলাকায় পুলিশ একাধিক অভিযান চালিয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, তাদের অবস্থানের খুব বেশি তথ্য আমাদের কাছে নেই। ফলে আমরা নানা ধরনের ফাঁদ পেতেছি। কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে গোয়েন্দারা কারাগারে থাকা জঙ্গিদের জন্য যে ফাঁদ পেতেছে, তাতে জেলখানায় তাদের মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছে। তারা আসলে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে সেটা দেখা হচ্ছে। তাদের সম্ভাব্য অবস্থান নিয়েও কাজ করছে গোয়েন্দাদের একাধিক টিম।

প্রসঙ্গত, গত ২০ নভেম্বর পুরান ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ফটকে পুলিশকে মারধর ও চোখে পিপার স্প্রে করে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্যকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। তারা হলো- মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। ওই দুজনসহ ১২ আসামিকে সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সিএমএম) হাজতখানায় নেয়ার সময় বাইরে থাকা জঙ্গিরা তাদের ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ২০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করে পুলিশ, যেটি সিটিটিসি ইউনিট তদন্ত করছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দফতর ও ডিএমপি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ