রাজশাহী এবং সিলেটে বরিশাল ও খুলনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এই দুই সিটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। এরমধ্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো আবারও মেয়র নির্বাচন হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো মেয়র হলেন তিনি। এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তার জয়ে ১০ বছর পর সিলেট সিটিতে মেয়র পদে জয় পেল আওয়ামী লীগ।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ১৫৫টি কেন্দ্রে এবং সিলেটে ১৯০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৯টার দিকে সব কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী লিটনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন। এদিকে রাত সোয়া ৯টার দিকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের।
রাজশাহীতে লিটন নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৬০ হাজার ২৯০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলনের মুরশিদ আলম হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৪৮৩ ভোট। এই নির্বাচনে মেয়র পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী চারজন। তার মধ্যে ইসলামী আন্দোলন পরে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়ায় তাদের প্রার্থীর নাম ব্যালটে থেকে যায়।
এছাড়া জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার ১১ হাজার ৭১৩ ভোট এবং জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন ১০ হাজার ২৭২ ভোট পেয়েছেন। বড় ধরনের গোলযোগ না হলেও দুটি কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাত বেঁধেছিল। রাজশাহীতে একজন মেয়র, ৩০ জন সাধারণ কাউন্সিলর, ১০ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। বিএনপিসহ অধিকাংশ দলের বর্জনের মধ্যে রাজশাহীতে ভোটের হার দাঁড়ায় ৫৬ দশমিক ২০ শতাংশ। রাজশাহীতে ২০০৮ সালে ভোটের হার ছিল ৮১.৬১ শতাংশ। ২০১৩ এ সিটিতে ভোট পড়ে ৭৬.০৯ শতাংশ। সবশেষ ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ৭৮.৮৬ শতাংশ।
এদিকে সিলেটে আনোয়ারুজ্জামান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট। এই নির্বাচনে মেয়র পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী আটজন। তার মধ্যে ইসলামী আন্দোলন ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়, যদিও তাদের প্রার্থীর নাম ব্যালটে থেকে যায়। হাতপাখার প্রার্থী মাহমুদুল হাসান ১২,৭৯৪ ভোট পেয়েছেন।
অন্য প্রার্থীদের মধ্যে শাহ জাহান মিয়া ২৯,৬৮৮ (বাস), মোশতাক আহমেদ রউফ ২,৯৫৯ (হরিণ), আব্দুল হানিফ কুটু ৪,২৯৬ (ঘোড়া), জহিরুল ইসলাম ৩৪০৫ (গোলাপ ফুল), ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট) ২,৬৪৮ ভোট পেয়েছেন। সিলেটে একজন মেয়র, ৪২ জন সাধারণ কাউন্সিলর, ১৪ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। বিএনপিসহ অধিকাংশ দলের বর্জনের মধ্যে এখানে ভোটের হার দাঁড়ায় ৪৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। সিলেটে ২০০৮ সালে ভোট পড়ার হার ছিল ৭৫ শতাংশ। ২০১৩ সালে এ সিটিতে ভোট পড়ে ৬২ শতাংশ এবং ২০১৮ সালেও ভোটের হার ছিল প্রায় ৬৩ শতাংশ।