যেসব দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল তাদের মধ্যে প্রাথমিক বাছাইয়ে টেকে ১২টি। এসব দলের মধ্যে চার দলের মাঠ পর্যায়ে যাচাইয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ভবনে তিনি আরও বলেন, পরবর্তীকালে এই চারটি দলের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত করলে দুটি দল চূড়ান্তভাবে বাছাই প্রক্রিয়ায় টিকে যায়। নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযোগ আহ্বান করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিল। আইন অনুযায়ী, শর্ত হচ্ছে কেন্দ্রীয় অফিস, ২২ জেলা অফিস ও ১০০টি উপজেলা অফিস থাকতে হবে। এই শর্ত যারা পূরণ করেছে তারাই বাছাইয়ে টিকেছে।
ইসির তালিকায় থাকা দুটি দলের মধ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) প্রধানের বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখল করে অফিস করার অভিযোগ আনা হয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার বলেন, বিষয়টি দেওয়ানি আদালতের বিষয়। সেটা তারাই দেখবেন।
তিনি বলেন, আমাদের আইন অনুযায়ী নিজস্ব বা ভাড়া অফিস হলেও চলবে। যে অভিযোগ আছে, আরও যদি অভিযোগ আসে, সে অভিযোগ আবার তদন্ত করবো। দুপক্ষের বক্তব্য শুনবো, তারপর সিদ্ধান্ত নেবো।
ইসি বলেন, এখন আমরা তো চূড়ান্তভাবে কাউকে নিবন্ধন দেয়নি। যেসব অভিযোগ আসছে, বা আরও আসবে সেগুলোর আমরা গণশুনানি করবো। অভিযোগ দেয়ার জন্য ২৬ জুলাই পর্যন্ত সময় আছে। শুনানিতে যদি দেখা যায় শর্ত পূরণ করেনি বা অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে তো নিবন্ধন পাবে না। এছাড়া উদ্দেশ্যমূলক রিপোর্ট দিয়ে থাকলে তাহলে ডিসি প্ল্যানারি অ্যাকশন হবে।
আলমগীর বলেন, অভিযোগ সত্য হলে নিবন্ধন পাবে না। এ জন্য আরেকটা তদন্ত না করে তো সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম নেই এমন দলকে নিবন্ধন দেয়া তালিকা রাখা হয়েছে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে, এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, একটা পারসেপশনাল সমস্যা আছে আপনাদের মাঝে... মনে করেন একটা দলের অনেক পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিটিজ আছে, কিন্তু অফিস নাই তাহলে তো নিবন্ধন পাওয়ার সুযোগ নাই। আইনে যদি থাকতো কতটা সভা করেছে, আন্দোলন করেছেন, কতটা পোস্টার করেছেন, কতটা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন তাহলে বলা যেত। কিন্তু আইনে তো আছে একটা কেন্দ্রীয় কমিটি, ২২ জেলা ও ১০০টি উপজেলা কার্যালয় থাকতে হবে।
হিরো আলমের বিষয়ে ইসি বলেন, আমরা কিছুটা ডিসপ্লিজড। কেননা, ১২৪টা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছে। সবাই সহাযোগিতা করেছেন। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হয়েছে। কোনো অশান্তি হয়নি। সোয়া ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে একটা ঘটনা ঘটলো। এটা নিয়ে আমরা ডিসপ্লিজড। মোটেই আমরা সেটিসফাই না। এ জন্য ডিএমপি কমিশনারকে বিস্তারিতভাবে দেখে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, কারও না কারও অবহেলা ছিল। একজন প্রার্থীর নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব ইসিসহ সবার। পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, কে দায়ী তা বের হয়ে আসুক তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কে দায়ী তদন্ত হওয়ার আগে বললে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন প্রত্যেক প্রার্থীকে বলা হয়েছে তারা প্রচারে গেলে যেন আমাদের জানানো হয়। কিন্তু একজন প্রার্থী নিতে চায়নি। তারা বলেছে এতে প্রচার কৌশলের গোপনীয়তা থাকবে। তো এই ধরনের সহায়তা দেয়ার নির্দেশনা ছিল। আমাদের পক্ষ থেকে আমাদের কোনো দুর্বলতা ছিল না। দুঃখজনক ঘটনা নিয়ে তারা বিবৃতি দিয়েছে এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তবে আমাদের আইনের ব্যত্যয় হয়েছে। এ জন্য আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। বিদেশিরা যদি আমাদের নিয়ে বলতো তাহলে আমাদের ব্যাখ্যা থাকতো। ১২৪টি কেন্দ্রের বাকিগুলোতে হয়নি। স্থানীয় সরকারের আরও নির্বাচন ছিল। সেখানে তো হয়নি। এই পুলিশ, আনসার, বিজিবি নিয়ে নির্বাচন করেছি। তাহলে আপনারা কীভাবে বলছেন যে পুলিশ আমাদের কথা শুনছে না। পুলিশ দায়িত্বে অবহেলা করছে।
ইসি আলমগীর বলেন, যেহেতু আইনে ব্যত্যয় হয়েছে। আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় ব্যবস্থা নিচ্ছি। পুলিশের ভূমিকায় অবশ্যই সন্তুষ্ট। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কতিপয় জায়গায় হয়তো কারও অবহেলা থাকতে পারে, সে ক্ষেত্রে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।