রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সহিংসতার আতঙ্কে মানুষ

সহিংসতার আতঙ্কে মানুষ

হঠাৎ করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। যার কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ ও আতঙ্ক। শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের যুগ্ম কমিশনারসহ ২০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় বিএনপির ৯০ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে এবং ৫ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবারও মুখোমুখি অবস্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।

রাজধানীর নয়াপল্টনসহ সকল জেলা ও মহানগরে আজ জনসমাবেশ করবে বিএনপি। একইদিন ঢাকা উত্তরে একই কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগ কোনো কর্মসূচি না দিলেও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি রেখেছে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। থানা ও ওয়ার্ডগুলোতে এই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। শেরেবাংলা নগরে মেলা মাঠে সোমবার মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশ’ হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি থেকে ঢাকা শহরে চলাচলকারী বিভিন্ন পরিবহনের ৭টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ২৪টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। 

সংগঠনের সভাপতি মসিউর রহমান ও মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান ও সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী যৌথভাবে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৪-২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে সারাদেশে ৫ হাজার গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে এবং ৯২ জন শ্রমিককে হত্যা করেছে। অতীতের ন্যায় আবারও তারা আন্দোলন কর্মসূচির নামে সহিংসতা শুরু করেছে।

আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও কোনোভাবেই বরদাস্ত করা যায় না উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা এ ধরনের ধ্বংসাত্মক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের জরুরিভাবে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানসহ ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িগুলোর ক্ষতিপূরণ আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে আদায় করতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তারা। 

অন্যদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শনিবার ৫০০ জন নেতাকর্মী আহত ও ১২৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া তিনি জানান, গত ১৯ মে থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে মোট ৩২০ মামলা, গ্রেপ্তার ১৫১৪ জন, মোট আসামি প্রায় ১৪৫০-এর অধিক নেতাকর্মী।

রিজভী বলেন, বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে উপস্থিত হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাঁড়াশি আক্রমণ শুরু করে। তাদের সাথে যোগ দেয় সরকারদলীয় সশস্ত্র ক্যাডাররা।

ব্যাপক গুলিবর্ষণ, অজস্র কাঁদানো গ্যাস নিক্ষেপ ও বেপরোয়া লাঠিচার্জে অগণিত নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করা হয়। এই নারকীয় আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাননি দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তাকে রাস্তার ওপর ফেলে দিয়ে মাথায় ও হাত-পায়ে নির্দয়ভাবে আঘাত করা হয়।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন