বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫

‘ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’র সঙ্গে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংহতি

‘ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’র সঙ্গে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংহতি

ফিলিস্তিনের গাজায় ক্রমবর্ধমান ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের আহ্বানের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রোববার (৬ এপ্রিল) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। 

এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কুয়েট, চুয়েট, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

এ ছাড়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সোমবার ক্যাম্পাসে সংহতি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। 

অন্যদিকে, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিসহ আরও বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সংহতি প্রকাশ করেছেন।


এদিকে, গাজাবাসীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ইংরেজি অক্ষরে ছবিতে লেখা রয়েছে, ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল আনটিল জেনোসাইড স্টপস’ অর্থাৎ গণহত্যা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাজ ও স্কুল বন্ধ।’ 


ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, সংহতি জানাই। আগামীকাল ৭ এপ্রিল ইসরায়েলি দখলদারিত্ব এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটে যোগ দিন।’


এ ছাড়া, আগামীকাল বিশ্বব্যাপী হরতাল পালনে আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।


এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, মানুষ ও মুসলিম হিসেবে এসব (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-অফিস-আদালত) বন্ধ রাখাতেই আমাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত নয় বরং দলমত নির্বিশেষে সারাদেশের ছাত্র-জনতা একসঙ্গে রাজপথে নেমে ইসরায়েলি খুনিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো উচিত। আমরা হয়তো এই মুহূর্তে আমাদের গাজার ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে পারবো না। কিন্তু তাদের লড়াইয়ের সঙ্গে একত্বতা ঘোষণা করতে নিজ ভূমির রাজপথে অন্তত নামতে পারবে।


তিনি বলেন, এনসিপি, বিএনপি জামায়াত বা কোনো (রাজনৈতিক) দলের ব্যানারে নয় বরং দল-মত নির্বিশেষে ‘বাংলাদেশ’ ব্যানারে আগামীকাল আমরা রাজপথে নেমে গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি। খুনি, রক্তপিপাসু নেতানিয়াহুর বিপক্ষে স্লোগান দিতে পারি। প্রত্যেক জেলায় ছাত্রজনতার প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজন মিলে দায়িত্ব নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই কর্মসূচি পালিত হোক। ৭ এপ্রিল কোনো দল, মত, পক্ষের হয়ে নয় বরং বাংলাদেশের পক্ষ হতে গাজার মজলুম মানুষের পক্ষে হোক।


একই আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম। নিজের ফেসবুকে পেজে তিনি লিখেছেন, গাজার প্রতি বৈশ্বিক সংহতির অংশ হোন। আগামীকাল সোমবার, ৭ এপ্রিল ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’- এই কর্মসূচি সফল করুন।  


ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনে চলমান নিষ্ঠুর হামলার প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে এবং অবৈধভাবে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রনেতা এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলনের দুই সংগঠক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ এবং এ বি জোবায়ের। তারা আগামীকাল সোমবার ফিলিস্তিনি যুবকের আয়োজিত ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি সফল করার জন্য অনুরোধ করেছেন। এ কর্মসূচি সফল করতে প্রতিটি বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান তারা।


এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক রেজওয়ান আহমেদ রিফাত বলেন, ‘MARCH For Palestine’ এর আহ্বানে আগামীকাল ৭ এপ্রিল বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরুদ্ধে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে সংহতি সমাবেশ করার আহ্বান। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বিকাল ৪টায় সংহতি এবং বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।


এর আগে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ৪৬ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে হামলায় এ পর্যন্ত ৫০ হাজার ৬৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।


সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ