আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল এক সপ্তাহের মধ্যে ঘোষণা করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। শুক্রবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল উপস্থিত ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিভাগীয় কমিশনার ও পুলিশ কমিশনার, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি), জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত দ্বিতীয় দফা প্রশিক্ষণের উদ্বোধন হয়। এ অনুষ্ঠানে সিইসিসহ ইসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দুই দিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যেসব আলাপ-আলোচনা হবে, তা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী শীর্ষ কর্মকর্তাদের মনোযোগ দিয়ে শোনার আহ্বান জানান কমিশনার আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামী এক সপ্তাহেই হয়তো তফসিল ঘোষণা হয়ে যাবে, সে জন্য আপনাদের আহ্বান জানাই, সবাই একটু মনোযোগ দিয়ে শুনি।’
নির্বাচন একটি টিমওয়ার্ক (যৌথ কাজ)। নির্বাচন কমিশন একা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। আজকের এ অনুষ্ঠানে এমনটাই বলেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান।
আহসান হাবিব বলেন, ‘এখন কিন্তু আগের দিনের মতো নেই। প্রতিটি সময়, প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি সেকেন্ড আমাদের নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। এখন দৃশ্যমান সবকিছু। সব সময় বলি, মিডিয়ার ভাইয়েরা আমার চোখের কাজ করে। যাদের হাতে মোবাইল আছে, তারাও কিন্তু এ ধরনের অ্যাকটিভিটিস (তৎপরতা) করছে।’
আহসান হাবিব আরও বলেন, ‘প্রায়ই একটা প্রশ্ন আস্তেঅতীত, অতীত, অতীত। আমি কিন্তু অতীতকে বিশ্বাস করি না। কারণ, অতীতকে আমরা পরিবর্তন করতে পারব না। অতীত থেকে আমরা শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে একটি সুন্দর, অবাধ, সুষ্ঠু, উৎসবমুখর; এমন একটা নির্বাচন উপহার দেব, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’
জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। এই ইসি বলেন, ‘যখনই আমরা নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলি, তখনই একটা প্রশ্নের জন্ম হয়। জনগণের মধ্য থেকে শুরু করে প্রার্থী যাঁরা থাকেন, প্রত্যেকের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। এই ক্ষোভের যেন সৃষ্টি না হয়, সেটা যেন কোথাও আমরা না দেখি। আপনারা আন্তরিকতার সঙ্গে সবাইকে সমান চোখে দেখে কাজটা করবেন।’
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘আপনারা সবই জানেন, নির্বাচন কীভাবে করতে হয়। আমরাও জানি কীভাবে নির্বাচন করাতে হয়। এর মধ্যে যদি কোনো পার্থক্য থাকে বা একটু গ্যাপ (ঘাটতি) থাকে, সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।’
নির্বাচনে কর্মকর্তাদের যে দায়িত্ব দেয়া হবে, তা যথাযথভাবে পালন করতে হবে উল্লেখ করে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘যাতে ভোটাররা নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, যাকে খুশি তাঁকে দিতে পারেন্তএটা নিশ্চিত করতে হবে।’
দুই দিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় আরও বক্তৃতা করেন ইটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান।