রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

হরতাল-অবরোধে ঢাকায় ৬৪ বাসে আগুন

হরতাল-অবরোধে ঢাকায় ৬৪ বাসে আগুন

বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল-অবরোধকে কেন্দ্র করে গত ২৮ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানীতে ৬৪টি বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর হয়েছে। এসব ঘটনায় ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ৬৪টি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন। শুক্রবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নাশকতার উদ্দেশ্যে বাসে আগুন দেয়ার সময় দুইজন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেপ্তার ও অগ্নি-সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দেয়ায় পুরস্কার দেয়ার বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মহিদ উদ্দিন বলেন, গত ২৯ অক্টোবর থেকে তিন দফা অবরোধ ও একদিন হরতাল পালিত হয়েছে।

এ কর্মসূচিতে জনগণের স্বাভাবিক জনজীবনে বিঘ্নিত করার প্রয়াস করা হয়েছে। যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয়ে ডিএমপি ইতিবাচক। এসব কর্মসূচির নিরাপত্তা দেয়ার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। 

সেই কাজটি আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, আমরা দেখেছি রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রকাশিত ও অগ্রহণযোগ্য ঘটনা ঘটেছে।

এ সময় দুষ্কৃতিকারীরা ঢাকা মহানগর এলাকায় ৬৪টি বাসে আগুন দিয়েছে। দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে দুষ্কৃতিকারীরা বাসে আগুন দিয়েছে। এতে করে দ্রুত করে বাসে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৩১ অক্টোবর রাতে একজন হেলপারকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। রাজধানীর ১২টি স্থানে আগুন দেয়ার সময় ১২ জন দুষ্কৃতিকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সবাইকে একটি অনুরোধ করতে চাই, রাজনৈতিক কর্মসূচি হলে ডিএমপি তার জায়গা থেকে যা যা করার তা করবে। কেউ যদি নাশকতা ও অগ্নিসংযোগ করে তাহলে ডিএমপি আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। আমরা আশা করব সামনে রাজনৈতিক কর্মসূচি এলে সেটি যেন ধ্বংসাত্মক না হয়। যারা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করে, তাদের বলতে চাই... তারা যেন এসব না করে। আমরা দেখেছি যে, এসব দুষ্কৃতিকারীদের বিভিন্ন জায়গা থেকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর তারা নির্বিচারে এসব নাশকতার কাজ করে। আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি আগামী ১২ ও ১৩ নভেম্বর অবরোধ কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। আমরা সবাইকে ডিএমপির পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাব, কেউ যেন রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম না করে।

গ্রেপ্তার ১২ জনের রাজনৈতিক পরিচয় কী জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, যে ১২ জনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি তারা প্রত্যেকই অবরোধ কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এমন দেখা গেছে যে, একজন আরেকজনকে নিয়োগ করেছে, আবার আরেকজন অন্য জনকে নিয়োগ করেছে। তারা বিভিন্নভাবে অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে মানুষকে ভীত করার জন্য এবং মানুষ যেন ভয়ে রাস্তায় না নামতে পারে সেই লক্ষ্যে অবরোধের আগের দিন ও অবরোধের দিন নাশকতা করেছে।

নাশকতাকারীদের কি কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে অর্থ দেয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বলেন, ‘অবশ্যই, তাদের অনেক ক্ষেত্রে প্রলোভন দেয়া হয়েছে যে, ‘তোমার জায়গা যদি সুদৃঢ় রাখতে চাও তাহলে এই কাজটি করে দাও’। এই ধরনের অনেক তথ্য আমাদের কাছে আছে। যারা অবরোধের ডাক দিয়েছে তারা এসব পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের লোক। তাদেরকে চিহ্নিত করতে এবং নাশকতাকারীদের পেছনে কারা আছে সেটি নিয়ে আমরা কাজ করছি।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, জনগণ এখন সচেতন। তারাও নাশকতা ঠেকাতে সোচ্চার। ইতোমধ্যে নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য একজনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। বাকি আরও কয়েকজন আছে। তাদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন