শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

বিডিআর হত্যাকাণ্ড: এ রহস্য উদঘাটন করতেই হবে: ড. ইউনূস

বিডিআর হত্যাকাণ্ড: এ রহস্য উদঘাটন করতেই হবে: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে। পুরো জাতি তদন্ত কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা সবাই উত্তর খুঁজছি। কমিশনকে এ ঘটনা তদন্তে সফল হতেই হবে।

মসৃণভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে মন্তব্য করে ইউনূস বলেন, নৃশংসভাবে নিজেদের অফিসারদেরই তারা মেরেছিল। এ ঘটনার তদন্ত কমিশনকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশনের সদস্যদের এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আলম ফজলুর রহমান, সদস্য বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান, মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, ড. এম আকবর আলী, মো. শরীফুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ খান চন্দন, এ টি কে এম ইকবাল।

মেজর জেনারেল (অব.) আলম ফজলুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করে বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কার্যক্রম পুরোদমে এগিয়ে চলছে। আগামী জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। যেহেতু ১৬ বছর আগের ঘটনা, তাই অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। অভিযুক্ত অনেকেই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। আমরা বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।

আমরা হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের প্যাটার্নটা নিয়ে তদন্ত করছি। ডিজিকে হত্যার পর বাকিদের হত্যা করা হয়েছিল। এটি ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পরিকল্পনা ছাড়া এমন হত্যাকাণ্ড হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন কমিশন প্রধান। তিনি বলেন, এটা যেন একটা পলাশীর পুনরাবৃত্তি। এটার শেকড় আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকেও সরানো হয়নি। কাউকে দায়ী করা হয়নি। এটি গোয়েন্দা সংস্থা, সামরিক বাহিনী এবং রাজনৈতিক ব্যর্থতা।

তিনি আরও বলেন, কারাগারে থাকা কয়েকজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তদন্তের জন্য যোগাযোগ করা প্রয়োজন এমন ২৩ জন বিদেশে অবস্থান করছেন। তার মধ্যে আট জন সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন‍্য যোগাযোগ করেছেন।

ঢাকার পিলখানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ১৬ বছর পর অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে সরকারের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কমিশনস অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ এর অধীনে মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমানকে (অবসরপ্রাপ্ত) সভাপতি করা হয়।

এই তদন্ত কমিশন তাদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তালিকায় শেখ হাসিনার উপদেষ্টাসহ তার সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও কয়েকজন সাংবাদিকের নাম রয়েছে। তবে এই তালিকায় নাম থাকা সাবেক মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের অনেকেই পলাতক রয়েছেন।

এদিকে, বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে দুটি মামলায় বিচার ইতিমধ্যে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটেছিল ২০০৯ সালে। বিদ্রোহের ঘটনার পর সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নাম পরিবর্তন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি রাখা হয়েছে।

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ