দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে ১৯ ও ২০ নভেম্বর হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলো। সারাদেশে রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার এই হরতাল চলবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে হরতালের ঘোষণা দেন। এদিকে হরতালের আগেরদিন শনিবার দু’টি বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর থেকে পৌনে আটটার আগ পযর্ন্ত এ ঘটনা ঘটে।
সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে কমল পরিবহনের বাসটিতে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে গুলিস্তান টোল প্লাজার সামনে একটি বাসে আগুনের সংবাদ আসে ফায়ার সার্ভিসের কাছে।
এর আগে ৬টা ৪০ মিনিটে রাজধানী আগারগাঁও তালতলা এলাকায় বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দুস্কৃতিকারী। এসময় একজনকে আটক করে জনতা। পরে তাকে কাফরুল থানা কাছে হস্থান্তর করা হয়। তার নাম-মোহাম্মদ সিয়াম (২১)।
এদিকে রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালে বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখতে মালিকদের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। হরতাল চলাকালে যদি কোনো বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে সেটির ক্ষতিপূরণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছে মালিক সমিতি।
ঘোষিত তফসিল প্রত্যাখান করে রিজভী বলেন, এই নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ কমিশন। জনমতকে উপেক্ষা করে একতরফাভাবে তফসিল জারি করে পুরো দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে সরকার।
এর আগে, বুধবার সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তফসিল অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সাত জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের পর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এরপর ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের শরিক দলগুলো। এরপর ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায়, ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফা, ১১ ও ১২ চতুর্থ দফা এবং ১৫ ও ১৬ নভেম্বর পঞ্চম দফায় অবরোধের ডাক দেয়া হয়।