পর্দায় দুর্দান্ত রকম সাহসী আজমেরী হক বাঁধন। প্রথা ভাঙা অভিনেত্রী হিসেবে নাম রয়েছে তার। ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি প্রতিবেদী কণ্ঠ। সামজিক বিভিন্ন ইস্যুতে মন্তব্য করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। গতকাল অভিনেতা ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে মামলায় হওয়ায় চুপ থাকতে পারেন এ অভিনেত্রী।
ভোরের আলো ফুঁটতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রীর লম্বা পোস্টে। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমি এখন জীবনের এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছি, যেখানে কোনো কিছুর প্রতিক্রিয়া সঙ্গে সঙ্গে জানাই না। কিন্তু কখনও কখনও নীরবতাই যেন বিশ্বাসঘাতকতার মতো মনে হয়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় সম্মুখ সমর হয়ে ছাত্রদের পাশে ছিলেন উল্লেখ করে বলেন, ‘ইরেশ যাকের সবসময় সত্যের পাশে ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রামের মুহূর্তে তিনি আমাদের, শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ৪ আগস্ট, যখন কারফিউ ঘোষণা করা হয়, তখন আমরা একসঙ্গে শাহবাগে ছিলাম। সমস্ত ঝুঁকি সত্ত্বেও, তিনি (ইরেশ যাকের) নিশ্চিত করেছিলেন যেন আমি নিরাপদে কালসি ফ্লাইওভারে পৌঁছে যেতে পারি। তখন যেকোনো কিছুই ঘটতে পারত।’
যেসব অভিনেত্রীরা শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের ওপর ক্ষমতাসীনদের চাপ ছিল। সবাইকে গণভাবনে যাওয়ার জন্য চাপ প্রযোগ করা হয়। তবে ক্ষমতার কাছে নতশিকার হননি ইরেশ। অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘যেদিন ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছি সেই রাতে আমাদের ওপর গণভবনে যাওয়ার প্রচণ্ড চাপ ছিল। কিন্তু ইরেশ যাকের সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন — শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার, সত্যের পাশে থাকার, চাপের কাছে নতিস্বীকার না করার সিদ্ধান্ত।’
ইরেশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে অভিনেতাকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে মনে করেন অভিনেত্রী বাঁধন। অভিনেতার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘আজ ইরেশকে হেনস্তার শিকার হতে দেখে হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। আমরা আগেও দেখেছি যারা সাহস করে সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছে, তাদের কী পরিণতি হয়েছে। তবুও যখন আমরা ভেবেছিলাম একটি ভালো, নিরাপদ দেশ গড়ছি, তখন এই দৃশ্য এখনও গভীরভাবে কষ্টদায়ক ও হতাশাজনক।’
সবশেষ অভিনেত্রী বলেন, ‘যারা সত্যের জন্য দাঁড়ায়, তাদের সুরক্ষা প্রাপ্য, নিপীড়ন নয়। আমরা ইরেশের পাশে আছি। আমরা সকলের পাশে আছি।’