সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত কাছারিবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে উত্তেজিত জনতার একটি দল অডিটোরিয়াম, কাস্টোডিয়ানের অফিস ও লাইব্রেরিতে হামলা চালিয়ে জানালা-দরজা ভাঙচুর করে। ঘটনাটি ঘটে এক দর্শনার্থীর সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীদের পূর্বেকার বাকবিতণ্ডার জের ধরে।
শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম আলী জানান, রোববার (৮ জুন) বিকেলে দর্শনার্থী শাহ নেওয়াজ তার স্ত্রী ও ভাতিজাকে নিয়ে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি ঘুরতে যান। সে সময় প্রবেশমূল্য দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করলেও মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের জন্য টাকা নেওয়া হলেও কোনো টোকেন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন শাহ নেওয়াজ। এ নিয়ে তার সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে লাঞ্ছিত করে বলেও অভিযোগ উঠে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয়রা। বিক্ষোভকারীরা শাহজাদপুরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির মূল ফটকে পৌঁছায় এবং ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। এতে কাস্টোডিয়ানের অফিস, লাইব্রেরি এবং অডিটোরিয়ামের জানালা ও দরজার ব্যাপক ক্ষতি হয়। হামলাকারীরা বিদ্যুৎ ও বাগান পরিচারক সিরাজুল ইসলামকে মারধরও করে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মুশফিকুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, কারা এই হামলা ও ভাঙচুরে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, শাহজাদপুর উপজেলার এই রবীন্দ্র কাছারিবাড়িটি ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত একটি দোতলা ভবন, যা বর্তমানে রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত। ১৮৪০ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর জমিদারি কিনে নেওয়ার পর কাছারিবাড়িটি ঠাকুর পরিবারের মালিকানায় আসে। জমিদারি তদারকির কাজে এই বাড়িতে কবি বেশ কয়েকবার অবস্থান করেছিলেন। ১৯৬৯ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাড়িটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে।