শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

পুলিশ কমিশনার, ডিসি, এসপি প্রত্যাহার শুরু

পুলিশ কমিশনার, ডিসি, এসপি প্রত্যাহার শুরু

❏ ভীতি প্রদর্শন, চাপ প্রয়োগ প্রমাণ হলে পুরো আসনের ভোট বাতিল

দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের দুই বিভাগের দুই পুলিশ কমিশনার, পাঁচ জেলার পুলিশ সুপার এবং একজন জেলা প্রশাসক ও তিন ওসিকে প্রত্যাহার করার নির্দেশ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব ও জন নিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছে ইসি। রোববার সকালে নির্বাচন কমিশনের উপ সচিব মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠিতে বরিশাল ও সিলেটের পুলিশ কমিশনার এবং হবিগঞ্জ, পিরোজপুর, নোয়াখালী, সাতক্ষীরা ও মেহেরপুরের পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক এবং মানিকগঞ্জ সদর, সিংগাইর ও শ্রীপুর থানার ওসিকেও প্রত্যাহার করে তাদের জায়গায় অন্য কর্মকর্তাকে পদায়ন করতে বলেছে ইসি।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। প্রত্যাহার হওয়া কর্মকর্তাদের স্থলে নতুন কর্মকর্তা দিতে বলা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ওসিদের বদলির পর এই পদক্ষেপ নিল ইসি। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে গত ৩০ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসিদের বদলি করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয় নির্বাচন কমিশন। কাদেরকে বদলি করা হবে সেই প্রস্তাব কমিশনে পাঠাতে বলা হয়।

সে অনুযায়ী ছয় মাসের বেশি সময় ধরে একই কর্মস্থলে থাকা ওসিদের তালিকা কমিশনে পাঠায় জননিরাপত্তা বিভাগ। আর এক বছর দায়িত্বে থাকা শতাধিক ইউএনওর বদলির প্রস্তাব দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয় ইসি।

এদিকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভীতি প্রদর্শন বা চাপ সৃষ্টি করা হলে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করা হবে। সেইসঙ্গে কোনো ভোটকক্ষে একসঙ্গে একাধিক ব্যালট বাক্সও ব্যবহার করা যাবে না। রোববার এক পরিপত্র জারি করে এসব তথ্য জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসির উপসচিব মো. আতিয়ার রহমানের সই করা পরিপত্রে বলা হয়েছে, কতিপয় ক্ষেত্রে কমিশনের নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করার ক্ষমতা: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ৯১ এর বিধান অনুসারে কমিশনের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, নির্বাচনে বলপ্রয়োগ, ভীতি-প্রদর্শন এবং চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের কারণে ন্যায়ানুগ ও নিরপেক্ষভাবে এবং আইন অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা নিশ্চিত করতে সক্ষম হওয়া যাবে না, সেক্ষেত্রে যেকোনো ভোটকেন্দ্র বা ক্ষেত্রমতো সম্পূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় যেকোনো পর্যায়ে ভোটগ্রহণ বন্ধ করতে পারবে কমিশন।  

তাছাড়া, কোনো ব্যালট পেপার নাকচ বা গ্রহণসহ, এ অধ্যাদেশ বা বিধিমালার অধীন কোনো কর্মকর্তার দেওয়া কোনো আদেশ পুনর্বিবেচনা করতে পারবে কমিশন। নির্বাচন নিরপেক্ষ, ন্যায়ানুগ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান ও ক্ষমতা প্রয়োগসহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য আদেশও দিতে পারবে ইসি।

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, ইসি জানায়, কোনো ভোটকক্ষে একই সময়ে একাধিক ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা যাবে না। একটি বাক্স যখন ভর্তি হয়ে যাবে তখন বাক্সটি উপস্থিত সবার সামনে সিল করে নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে এবং ভোটকক্ষে ওই বাক্সের স্থলে নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে অন্য একটি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ভোটগ্রহণের জন্য রাখতে হবে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সটি এমন স্থানে রাখতে হবে যা উপস্থিত প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট ও ভোটকেন্দ্রে কর্মরত ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার দৃষ্টিসীমার মধ্যে থাকে এবং সেখানে ভোটাররা সহজে পৌঁছাতে পারেন।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন