শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

মেট্রোরেলে নিরাপত্তা জোরদার

মেট্রোরেলে নিরাপত্তা জোরদার

❏ লাগেজ স্ক্যানার, আর্চওয়ে চায় ডিএমপি

❏ কমলাপুর স্টেশনে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন

বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের মধ্যে বাস ও ট্রেনে নাশকতার মধ্যে ঢাকায় মেট্রোরেলেও বাড়তি নিরাপত্তা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। বর্তমান পরিস্থিতিতে এবং সার্বিক বিষয়ের বিবেচনায় মেট্রোরেল স্টেশনে লাগেজ স্ক্যানার, আর্চওয়ে এবং বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ শনাক্তের মেশিন রাখার সুপারিশ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খ. মহিদ উদ্দিন।

তিনি বলেন, আমরা সব কিছু দেখলাম। যা যা করণীয় নিরাপত্তার প্রয়োজনে আলোচনা করে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এই বিষয়ে সকলে সহযোগিতা নিয়ে মেট্রোরেলের প্রতিটি অংশের নিরাপত্তায় আমরা কাজ করব।

মেট্রোরেল ঢাকায় চলাচল ও জীবনকে সহজ করেছে মন্তব্য করে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সেই মেট্রোরেলকে আমাদের নিরাপদ রাখা প্রয়োজন।

মেট্রোরেলে নাশকতার আশঙ্কা থেকে এই বাড়তি আয়োজন চাইছেন কি না, এই প্রশ্নে মহিদ বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি যে কোনো জায়গায় বিবেচনায় রাখা উচিত। নাশকতাকারীরা আগাম তথ্য দিয়ে কোনো অপরাধ করে না। এ মহূর্তে হামলার কোনো তথ্য না থাকলেও আমরা প্রতিটি স্থানে নিরাপত্তা পর্যাপ্ত বাড়াচ্ছি।

এদিকে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধ-হরতালের সময় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনের নিরাপত্তায় র‌্যাব কমলাপুর রেলস্টেশনে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করেছে। ট্রেন ছাড়ার আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে করা হবে স্ক্যানিংও। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়।

এর আগে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, কমলাপুর রেলস্টেশনে এখন থেকে ডগ স্কোয়াড কাজ করবে। স্টেশন ছাড়ার আগে প্রতিটি ট্রেনে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে স্ক্যানিং করা হবে। মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় গোয়েন্দা নজরদারি চলছে। নাশকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছে র‍্যাব। এখন থেকে সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে।

গত ২৯ অক্টোবর থেকে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনাদের আন্দোলনের মধ্যে গত কয়েকদিনে ট্রেনে নাশকতা উদ্বেগ ছড়িয়েছে। একটি ঘটনায় রেল লাইন কেটে দেয়া হয়েছে গাজীপুরে, একাধিক ট্রেনে দেয়া হয়েছে আগুন। সবচেয়ে প্রাণঘাতি ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার ভোরে। সেদিন নেত্রকোণা থেকে ঢাকায় আসার পথে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুন দেয়া হয় বিমানবন্দর স্টেশনের পরে। এতে প্রাণ হারায় চার জন।

ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, শুধু মেট্রোরেল নয়, সব রেল স্টেশন, বাস স্টেশন, রাস্তা, গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ প্রতিটি স্থানে প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি সম্পদ নিরাপদ রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

নাশকতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, নাশকতা আর নির্মমতা কোনদিনই জয়ী হয় না, জয় হয় শান্তির।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিসি ক্যমেরা শুধু থাকলেই হয় না। নিয়মিত মনিটরিং ও নজরদারিও করতে হয়। নজরদারিতে যদি কারো চলাচলে অস্বাভাবিক কিছু যদি পাওয়া যায় সেটিকে দ্রুত নোটিস করতে হয়। প্রত্যেক নিরাপত্তা কর্মীর হাতে ওয়ারলেস সেট থাকাটাও জরুরি, আমরা দেশের বাইরে এসব দেখেছি।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন