গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পছন্দের মানুষ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির চেয়ারে বসেছিলেন ফারুক আহমেদ। তবে মাত্র ৯ মাসেই সরকার ও ফারুকের সম্পর্কের ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যায়। যার ফলস্বরূপ গত মে মাসে বিসিবি থেকে অপসারণ করা হয় ফারুককে।
সে সময় কারণ হিসেবে উল্লেখ্য করা হয় বোর্ড পরিচালকদের না জানিয়ে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর করেছেন সাবেক এই ক্রিকেটার। এ ছাড়াও বোর্ড পরিচালকদের ৮ জন চিঠিতে উল্লেখ করেন, ফারুকের কারণে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ফারুক আহমেদকে বিসিবি থেকে সরানো নিয়ে কথা বলেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। সেখানে তিনি বলেন, ক্রিকেটের চেয়ে ওনার আগ্রহটা আমি দেখছি যে পরবর্তীতে আবার কীভাবে সভাপতি হয়ে আসা যায়, সেটার জন্য ক্লাব কীভাবে নেওয়া যায়, সেসব দিকে। তারপর ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দিকে ওনার আগ্রহটা বেশি দেখা গেছে…।
ক্রীড়া উপদেষ্টার এই মন্তব্যের পরই বোমা ফাটিয়েছেন ফারুক আহমেদ। দেশের জাতীয় একটি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ক্রীড়া উপদেষ্টায় তাকে নির্বাচন করার জন্য বলেছিলেন। তার পরামর্শেই বিসিবির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছিলেন।
ফারুক আহমেদ বলেন, ওনার (ক্রীড়া উপদেষ্টা) অফিস থেকেই তখন আমাকে নির্বাচনের জন্য ‘গো এহেড’ দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আমি নির্বাচনে অংশ নিলে তাদের কোনো সমস্যা নেই, আমি যেন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিই। পরে হয়তো তারা উপলব্ধি করেছে, আমি তাদের স্বার্থ দেখব না। তাই সরিয়ে দিয়েছে।
এনএসসি মনোনীত দুই পরিচালক ছাড়া বিসিবির নির্বাচনে অংশ নিতে হলে কাউন্সিলর হওয়া বাধ্যতামূলক। ক্লাব, জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা ছাড়াও আরও কিছু শ্রেণিতে বিসিবির কাউন্সিলর হওয়া যায়।
কিন্তু ফারুকের দাবি এসবের কিছুই করেন তিনি। তার ভাষ্য, আমি কোনো ক্লাব কিনিনি, কোথাও কাউন্সিলর হইনি, কাউন্সিলরশিপের জন্য কাউকে টাকা দিইনি। এমনকি এখন পর্যন্ত আমি বিসিবির কাউন্সিলর নই।
এদিকে বিসিবির পদ হারানোর পর ফারুক হুমকি দিয়েছিলেন, আইসিসির কাছে অভিযোগ জানাবেন। তবে শেষ পর্যন্ত সেই পথে হাঁটেননি জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচক।
এ নিয়ে তিনি বলেন, ওই সময় ক্ষোভে বলেছিলাম আইসিসিতে অভিযোগ করব। কিন্তু কয়েকদিন ভেবে দেখলাম, এতে দেশের ক্রিকেটের ক্ষতি হতে পারে। আইসিসি বিষয়টি আমলে নিলে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার মতো শাস্তি পেতে পারত বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের অক্টোবরে বিসিবির নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে কাউন্সিলররা।