বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স এবং জার্মানি। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি ম্যাসদুপুই এবং জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার এ আগ্রহের কথা জানান। দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রথমে ফ্রান্স ও পরে জার্মানির রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আবারও নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও জার্মান চ্যান্সেলরের অভিনন্দন বার্তা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন দুই রাষ্ট্রদূত। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ফ্রান্স ও জার্মানি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। স্বাধীনতার পরপরই যে দেশগুলো আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল, এ দুটি দেশ তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার জার্মানি। ফ্রান্সও আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিশেষত তৈরি পোশাক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ওপরের সারিতে রয়েছে। সম্পর্ক গভীর করতে আমাদের ‘বিজনেস বাস্কেট’ বিস্তৃত করা নিয়ে আলোচনা করেছি।
ড. হাছান জানান, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এয়ারবাস কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরে এটি আলোচনা হয়েছিল। আমাদের ইকোনমি যখন পারমিট করবে তখন আমরা পারবো। জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের যুদ্ধশিশুদের নিয়েছিল জার্মানি। ফ্রান্সও কিছু নিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতার কারণেই ওই শিশুদের জন্ম হয়েছিল। জার্মানি তখন অনাথ শিশুদের ব্যাপক হারে নিয়েছিল। আমাদের অনেক মুক্তিযোদ্ধাও পঙ্গু হয়েছিলেন। তাদের বেশিরভাগকেই চিকিৎসা দিয়েছিল জার্মানি। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি।
প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়- এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ আমাদের একটা অগ্রাধিকার। বিশেষত, আবহাওয়া বার্তা পাঠানোর জন্য নিরাপত্তা ইস্যুতে এটি অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। এ নিয়ে সেপ্টেম্বরে এমওইউ হয়েছে। এর মধ্যে আমাদের নির্বাচন ছিল। নিশ্চয়ই কাজটি দ্রুত এগোবে।
সাংবাদিকদের অন্য প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ফেব্রুয়ারিতে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে যোগ দিতে জার্মানি যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সাইডলাইনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক বিষয়ে আলোচনা চলছে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে দুই রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনাই দুই দেশের রাষ্ট্রদূত তোলেননি। বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় জার্মানির চ্যান্সেলর ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের অভিনন্দন বার্তার হার্ডকপি আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন দুই রাষ্ট্রদূত।