বুয়েট শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি স্মরণে রাজধানীর পলাশী গোলচত্বরে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) এই স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন হয়।
এই আগ্রাসনবিরোধী আটটি স্তম্ভ নির্দেশ করে সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, গণপ্রতিরক্ষা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা, দেশীয় শিল্প-কৃষি-নদী-বন-বন্দর রক্ষা, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ও মানবিক মর্যাদা—এই আটটি মৌলিক মূল্যবোধকে।
শহীদ আবরারের স্মৃতি ও আগ্রাসনবিরোধী চেতনাকে সমুজ্জ্বল রাখতে ‘শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি স্মরণে পলাশী গোলচত্বরে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ নির্মাণ ও পলাশী ইন্টারসেকশন উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এই স্তম্ভ নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আটটি স্তম্ভের অবয়বের চেয়ে এতে লিপিবদ্ধ বিষয়বস্তুর গুরুত্ব অনেক বেশি। এই শব্দগুলোর বাস্তবায়নের মাধ্যমেই এ বদ্বীপের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হবে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের সময়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একের পর এক ভাস্কর্য ও প্রকল্প নির্মাণ করে ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রাখা হয়েছে, অথচ এখন ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির পক্ষে কিছু করলেই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন হতে হয়। এই বাস্তবতায় আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৩৯.৫৯ লাখ টাকা।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, আবরার ফাহাদের স্মৃতিকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, আবরার ফাহাদ কেবল একজন ব্যক্তি নন, তিনি একটি চেতনা, একটি আদর্শ।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালে আবরার যে বীজ বপন করেছিলেন, সেটি আজ ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই এসে একটি মহীরুহে পরিণত হয়েছে। আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার পরামর্শক্রমে ডিএসসিসি এই স্তম্ভ নির্মাণ করেছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম, বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, শহীদ আবরারের পিতা মো. বরকত উল্লাহ ও ভাই আবরার ফাইয়াজ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আগ্রাসনবিরোধী অবস্থানের কারণেই ২০১৯ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার সদস্যরা।