বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

বিগত ফলাফলগুলোয় গলদ ছিল: আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সভাপতি

বিগত ফলাফলগুলোয় গলদ ছিল: আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সভাপতি

বিগত ফলাফলগুলোয় গলদ ছিল, এবারের ফলাফল থেকে এটিই প্রতীয়মান হয় বলে মন্তব্য করেছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ফলাফল প্রকাশের পর সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।  

ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, এসএসসির পর এইচএসসির ফলাফল দিলাম। কাউকে ছক বেধে দিইনি যে ছাড় দিয়ে পাসের হার বাড়াবেন। এমন ভাবনা থাকার প্রয়োজন নেই। সরকারের নির্দেশনা ছিল, নিয়ম মেনেই সব হবে।

বিগত ফলাফলগুলোয় গলদ ছিল, এবারের ফলাফল থেকে এটিই প্রতীয়মান হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভুল লিখলেও ১, ২ দিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সবাই একমত হয়েছেন এবং বিষয়টি নিয়ে খুশি। বোর্ডের পক্ষ থেকে নির্দেশনা না পেয়ে পরীক্ষকরাও আনন্দিত। তারা ভালো খাতা দেখার সুযোগ পেয়েছেন। সময়ও বাড়ানো হয়েছে, তারা দেখে নম্বর পাঠিয়েছেন। আমরা সংযোজনের কাজ করেছি।

সকাল ১০টায় দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর সব শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৫৮.৮৩, বিগত ২০২৪ সালে ছিল ৭৭.৭৮ শতাংশ। ২০২৪ সালে শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠান ছিল ১ হাজার ৩৮৮টি। 


 আর চলতি ২২৫ সালে শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠান কমে হয়েছে ৩৪৫টি। সে হিসেবে ১ হাজার ১৩টি শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে। এ বছর সকল শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৫৯ হাজার ২৩২ জন বেশি ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ৪ হাজার ৯৯১ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে। 

এ বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৮৭ হাজার ৮১৪ জন বেশি ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ৫ হাজার ৯৭ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে। ২০২৪ সালে জিপিএ-৫ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন, ২০২৫ সালে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা ৬৯ হাজার ৯৭ জন, জিপিএ-৫ কমেছে ৭৬ হাজার ৮১৪ জন। ২০২৪ সালে শূন্য পাস প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৫টি, ২০২৫ সালে শূন্য পাস প্রতিষ্ঠান ২০২টি। মোট প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২০৫টি। আর মোট কেন্দ্র বেড়েছে ১০৫টি।



সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ফলাফল অর্জনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ, শ্রেণি কক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ইতিবাচক আন্তসম্পর্ক, শিক্ষকদের প্রযুক্তি নির্ভর পাঠদান, অভিভাবকদের ক্রমবর্ধমান সচেতনতা ও সহযোগিতা এবং সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা পরিচালনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।




বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রকাশিত ফলাফল শিক্ষার্থীরা তিনভাবে জানতে পারবে।


প্রথমত, অনলাইনে www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে বোর্ডের নাম, রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে ফলাফল দেখা যাবে। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা পরীক্ষা কেন্দ্র থেকেও ফল জানা যাবে। তৃতীয় পদ্ধতিতে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানা সম্ভব— এক্ষেত্রে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে HSC <স্পেস> বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর <স্পেস> রোল <স্পেস> বছর লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে।


আর ফল প্রকাশ উপলক্ষ্যে একই দিন সকাল ১০টায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভাও অনুষ্ঠিত হবে।


এদিকে, ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণ আবেদন গ্রহণ করা হবে আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে https: //rescrutiny.eduboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবে। শিক্ষা বোর্ড বা অন্যকোনো অফিসে সরাসরি আবেদন গ্রহণ করা হবে না।


প্রসঙ্গত, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেন। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন ছাত্রী। সারাদেশে মোট ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।


সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ